চট্টগ্রাম সিটির প্রশাসক হলেন আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম সুজন

অবশেষে সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মেয়াদ শেষ হবার একদিন আগেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক পদে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিলেন সরকার। যিনি কিনা চট্টগামের আওয়ামী রাজনীতিতে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুগত হিসেবে সমধিক পরিচিত। এদিকে বুধবার ৫ই আগস্ট শেষ হচ্ছে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়রসময়।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ||

অবশেষে সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মেয়াদ শেষ হবার একদিন আগেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক পদে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিলেন সরকার। যিনি কিনা চট্টগামের আওয়ামী রাজনীতিতে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুগত হিসেবে সমধিক পরিচিত। এদিকে বুধবার ৫ই আগস্ট শেষ হচ্ছে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়রসময়।

সোমবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, (চসিক) প্রশাসক পদে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রামের আওয়ামী রাজনীতিতে বিবদমান দুই গ্রুপের এক গ্রুপ চেয়েছিল বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সরিয়ে তাদের অনুগত একজনকে প্রশাসক পদে বসাতে। এ জন্য নগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্যকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকারও ‘বার্তা’ দিয়েছিলেন নাছিরবিরোধী গ্রুপসংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে মেয়র আ জ ম নাছির একমাস আগেই দলের হাইকমান্ডকে সাফ জানিয়ে দেন যে, পাঁচ বছরের মেয়াদশেষে তিনি আর মেয়র পদে থাকতে চান না। তবে একটি সূত্রের দাবি, বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত মেয়র পদে রাখতে আপত্তি ছিল না সরকারের। কিন্তু মেয়র নাছির নিজেই সেই পদে আর থাকতে চাননি। তিনি নিজের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন সরকারের একাধিক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে। সেই কারণে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন আমলার খোঁজে নামে সরকার। পরে হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত পাল্টায়। সিদ্ধান্ত হলো প্রশাসক পদে কোন আমলা নয়, বরং দলের একজন সর্বজনগ্রাহ্য কাউকে এই পদে বসানো হবে। সেই সিদ্ধান্ত থেকেই একসময়ের ছাত্রলীগ নেতা, ও পরে আওয়ামী লীগের মাঠের নেতা খোরশেদ আলম সুজনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমার নিজস্ব কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইউনিট চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন, দলের মনোনয়ন দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের মেয়র হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন- তাতেই আমি কৃতজ্ঞ। নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দের কথা না ভেবে আমি চেষ্টা করেছি সম্পূর্ণ কলুষমুক্ত থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে। নিশ্চয়ই এই শহরের মানুষ তার প্রত্যক্ষদর্শী।’

তিনি আরও বলেন, ‘জীবনের প্রায় ৬৪ বছর পার করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যার আদেশ-নির্দেশ শিরোধার্য মেনে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে দলের জন্য কাজ করবো, চট্টলবাসীর সুখে-দু:খে নিজেকে বিলিয়ে দেবো-এটাই আমার পরম ব্রত।’

এ ব্যাপারে নবনিযুক্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘এই পদে আসার জন্য আমি কোনো চেষ্টা-তদবির করিনি। ৫০ বছর ধরে মাঠে আছি। দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ নিয়েই এগিয়ে গেছি। এটা চট্টগ্রামবাসী যেমন জানে, তেমনি জানেন জাতির জনকের কন্যা, আমার নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আমার প্রতি যে আস্থা রেখেছেন, সেই আস্থার মর্যাদা জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করবো।’

উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ৬ই আগস্ট আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী পর্ষদের মেয়াদ পাঁচ বছর। এই হিসাবে বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৫ই আগস্ট। নিয়মানুযায়ী মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সে হিসাবে ২৯শে মার্চ ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করেছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভোটের এক সপ্তাহ আগে ২১শে মার্চ নির্বাচন স্থগিত করে ইসি।

স্থগিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি দলটির নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তার বদলে নৌকার মনোনয়ন পান নগর কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান দলটির নগর কমিটির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন