|| অনলাইন প্রতিনিধি, নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) ||
অবশেষ গ্রেফতার হলেন তেরো বছরের কিশোরীকে বিয়ে করা ৬৫ বছরের প্রেমিক(!) রিক্সাচালক সামছুল হক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার হরিশচরের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করা হয়। কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরপর কিশোরীর জবানবন্দী নিতে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। অভিযুক্ত সামছুল হককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কিশোরীর পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমাম হোসেন ঢাকায় চাকরি করায় তার পরিবারের দেখভাল করতেন পেরুল দীঘিরপাড়ার রিকশাচালক সামছুল হক।
ইমাম হোসেনের দ্বিতীয় কন্যা এলাকার পেরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সামছুল হক নিজের রিকশায় তাকে নিয়মিত স্কুলে আনা নেওয়া করতেন। একপর্যায়ে সামছুল হক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই তিনি কিশোরীর বাড়িতে রাতে থাকতেন। এনিয়ে স্থানীয়রা আপত্তি করলে তিনি বলতেন, ১৮ বছর বয়স হলে কিশোরীর সঙ্গে নিজের ছেলে মনিরের বিয়ে করিয়ে নেবেন বলে জানাতেন সবাইকে।
এসব ভনিতার অবসান ঘটিয়ে গেল ১০ই মে কিশোরীকে নিয়ে পালিয়ে যান সামছুল হক। এ নিয়ে স্থানীয়দের প্রতিবাদে ১১ই মে পেরুল দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান লোক মারফত সামছুল হক ও কিশোরীকে ইউপি কার্যালয়ে হাজির করে বিস্তারিত জানতে চান। ওই সময় সামছুল হক কিশোরীর প্রাথমিক শিক্ষা সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ ও বিয়ের কাবিননামা দেখান।
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সনদ ও জন্মনিবন্ধনে তার জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ০২/০২/২০০২ইং। কাবিননামায় দেখা যায়, গত ১০ই মে কুমিল্লা সিটি কর্পোশেনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্টার মুজিবুর রহমান সরকারের কার্যালয়ে ৫ লাখ টাকা মোহরানায় তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। এতে সামছুল হকের জন্মতারিখ ০৩/০১/১৯৫৫ইং উল্লেখ রয়েছে।
১৪ই মে বিকালে কিশোরীর মা তাছলিমা বেগম বাদী হয়ে সামছুল হকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২/৩জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লালমাই থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে লালমাই থানার এস আই মোশারফ হোসেন উপজেলার পেরুল উত্তরের হরিশচর স্কুল সংলগ্ন হাবিব স্যারের ভাড়া বাসা থেকে সামছুল হককে আটক করেন। এসময় পুলিশ তার হেফাজত থেকে ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করেন।
লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, বৃদ্ধ সামছুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার হেফাজত থেকে অপহৃতাকেও উদ্ধার করেছি। শুক্রবার সকালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জবানবন্দী রেকর্ডের জন্য আদালতে পাঠানো হবে তাকে। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রক্রিয়া চলছে।