|| সারাবেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ||
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ ছাড়লেন শাহ আহমদ শফী। এর মধ্য দিয়ে দেশের অন্যতম বড় কওমী মাদ্রাসাটিতে আল্লামা শফী নামে সমধিক পরিচিত এ শিক্ষকের প্রায় তিন যুগের কর্তৃত্বের অবসান হলো।
বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসার শূরা (পরিচালনা ) কমিটির বৈঠকে আহমদ শফী পদত্যাগ করেন। বৈঠকে তার ছেলে আনাস মাদানী ও অনুসারী আরেক শিক্ষক মাওলানা মাওলানা নূরুল ইসলামকে মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। শূরা কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন নানুপুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন। বৈঠকে ১২ সদস্যের শূরা কমিটির পাঁচ সদস্য এবং মাদ্রাসার প্রবীণ ‘ওস্তাদরা’ উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি জানান।
১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম বা মহাপরিচালক পদে যোগ দেন আহমদ শফী। ৩৪ বছর পর তিনি ওই পদ থেকে বিদায় নিলেন। এর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশেরও (বেফাক) সভাপতি।
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ আহমদ শফীর উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে কয়েক মাস আগে তার সমর্থকদের সঙ্গে হাটহাজারী মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামীম ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর সমর্থকদের দ্বন্দ্ব বাঁধে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে কিছু দিন বন্ধ থেকে মাদ্রাসা খোলার পর বুধবার আকস্মিকভাবে মাদ্রাসার কয়েকশো শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করে। তারা আহমদ শফীর অব্যাহতি এবং তার ছেলে মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আনাস মাদানির বহিষ্কার দাবিতে বিভিন্ন কক্ষে ভাংচুর চালায়। এই পরিস্থিতিতে সরকার কওমি মাদ্রাসাটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও অধ্যক্ষকে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে চিঠি পাঠায় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
ওই চিঠি পাওয়ার পর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহষ্পতিবার রাতে আহমদ শফীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসে মাদ্রাসার শূরা কমিটি। সেখান থেকেই আহমদ শফীর পদত্যাগ ও অন্য দুই শিক্ষকের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত আসে।