|| মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, কুমিল্লা থেকে ||
গত এক সপ্তাহ ধরে কুমিল্লা জুড়ে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ ও জ্বর-ঠাণ্ডায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকের তুলনায় এ ধরনের ওষুধের চাহিদা বেড়েছে অন্তত ২০গুণ।
কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাপা, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ড, এইস, এইস প্লাস, নাপা সিরাপ ও জিংক টেবলেটসহ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ কম পাওয়া যাচ্ছে।
কুমিল্লা নগরীর রানির দিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, কান্দিরপাড় এলাকায় একাধিক ফার্মেসিতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে রাজগঞ্জ এলাকা থেকে ওষুধটি সংগ্রহ করেছি।
আনোয়ার হোসেন নামে আরেক ব্যক্তি জানান, বাখরাবাদ এলাকায় নাপা বা এইচ কোনো ওষুধ না পেয়ে নগরীর চকবাজার এলাকা থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দিয়ে ওষুধ কিনতে হয়েছে।
তাজ ফার্মের সত্ত্বাধিকারী মাসুদুর রহমান বলছেন, করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি সাধারণ জ্বরের জন্যও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের খোঁজ করছেন বেশিরভাগ মানুষ। অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত ওষুধ কেনায় বাজারে এসব ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন অনেকে।
বাখরাবাদ বিসমিল্লাহ ফার্মেসির মালিক গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেন, কয়েকটি কোম্পানি অধিক লাভের আশায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ির কাছে এই গ্রুপের ওষুধ বিক্রি করছেন। এতে বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে।
নাঙ্গলকোটের স্থানীয় সাংবাদিক মুকুল মজুমদার জানান, নাঙ্গলকোটেও প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। ফার্মেসিগুলোতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছেনা। কোনো ফার্মেসিতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ পাওয়া গেলেও ভোক্তাকে মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
জেলার চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, সদর দক্ষিণ, লালমাই, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বারসহ অন্যান্য উপজেলায় খবর নিয়েও একই তথ্য পাওয়া গেছে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি লিমিটেডের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার আবদুল আউয়াল জানান, হঠাৎ করেই মার্কেটে প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আনুপাতিক হারে মার্কেটে সরবরাহের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে, বাজারে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সংকটের বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন।
অপরদিকে, ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি হলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন।