লে অফে যাচ্ছে চট্টগ্রামের ২ ইপিজেডে ৬৯ কারখানা

|| অনলাইন প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ||

করোনাদুর্যোগের মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা-ইপিজেডের ৪৬টি এবং কর্ণফুলী ইপিজেডের ২৩টি কারখানা। কার্যাদেশ না থাকা, শিপমেন্ট না হওয়ার কারণে দেশি-বিদেশি এসব কারখানার মালিকরা লে অফের জন্য ইপিজেড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। আবেদন গৃহিত হলে এসব কারখানার লাখখানেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে।

চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী ইপিজেডে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে কারখানা রয়েছে দুইশ’ মতো। এর মধ্যে কর্ণফুলী ইপিজেডে রয়েছে ৪১টি। এসব কারখানায় ৭৬ হাজারের মতো শ্রমিক কাজ করছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানার রয়েছে ১৫৮টি। সেখানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ।

কারখানা মালিকরা বলছেন, কাঁচামাল না থাকা, বিদেশি ক্রেতারা কার্যাদেশ বাতিল করা, নতুন কার্যাদেশ না থাকা, শিপমেন্ট না হওয়ায় তারা কারখানা লে অফের আবেদন করেছেন। এছাড়াও সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতেও কার্যাদেশ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণও দেখানো হয়েছে মালিকদের আবেদনে। লে-অফ হতে যাওয়া কারখানাগুলোতে প্রধানত রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, জুতা, তাঁবু, ফেব্রিক্স ও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য তৈরি করা হয়।

কারখানা কর্তৃপক্ষের লে-অফ ঘোষণার আবেদনে উদ্বেগ জানিয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে লে-অফ ঘোষণা কাম্য নয়। এমনিতেই করোনা ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণায় দেশজেুড়েই বেকার হয়ে পড়েছে অসংখ্য শ্রমিক। তার মধ্যে এতোগুলো কারখানা লে-অফ হলে আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়বে শ্রমিকরা।

এব্যাপারে কর্ণফুলী ইপিজেডের জিএম মশিউদ্দিন বিন মেজবাহ বলেন, ‘গত ৫ই এপ্রিল থেকে বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ লে-অফের জন্য আবেদন করেছে। তাদের ইপিজেডে মোট ২৩টি কারখানা বিভিন্ন মেয়াদে লে-অফের জন্য আবেদন করেছে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ-বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, অনেক কারখানা বন্ধ, কাঁচামাল নেই, কার্যাদেশ বাতিল হয়েছে। সব মিলিয়ে তারা বিভিন্ন মেয়াদে লে অফে যাচ্ছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে শ্রমিকদের কারখানায় এনে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মধ্যে ফেলার চেয়ে কর্তৃপক্ষ লে অফ ঘোষণা করলে ঝুঁকি অনেক কমে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন। তবে কারখানাগুলো লে অফে গেলেও নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করতে হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

শ্রম আইন অনুযায়ী, লে-অফ চলাকালে প্রথম ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে পূর্ণকালীন শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, মহার্ঘ ভাতার অর্ধেক দিতে হয় মালিককে। পরের ১৫ দিনের জন্য শ্রমিক পাবে ২৫ শতাংশ মূল বেতন এবং বাড়ি ভাড়া। আর বন্ধ ঘোষণা করতে হলে প্রতিবছর চাকরির জন্য এক মাসের মূল মজুরি ও এক মাসের মজুরি ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে। এ ছাড়া ভবিষ্য তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড) ও পাওনা ছুটির অর্থ পরিশোধ করতে হবে।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন