লক্ষ্মীপুরে শিশু মৃত্যুহার কমেছে ৯০ ভাগ

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ণ ইউনিট স্ক্যান চালুর পর শিশু মৃত্যুর হার কমেছে প্রায় ৯০ভাগ। এ দিকে বিনামূল্যে এ চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি স্বজনরা।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর ||

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ণ ইউনিট স্ক্যান চালুর পর শিশু মৃত্যুর হার কমেছে প্রায় ৯০ভাগ। এ দিকে বিনামূল্যে এ চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি স্বজনরা। চিকিৎসকরা বলেছন, সরকারের যে চ্যালেঞ্জ নবজাতকের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার। সেটাই সম্ভব হয়েছে। তাই সময়মত শিশুদের এ ইউনিটে ভর্তি করা গেলে শিশু মৃত্যুর হার শুন্যের কোটায় নেমে আসবে। তবে সিভিল সার্জন বলছেন, স্পেশাল কেয়ার ইউনিট চালুর পর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে অসহায় ও দুঃস্থ্যরা যেন এ সেবা পেতে পারে, সেটাই অব্যহত রয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে প্রায় এক হাজার নবজাতক শিশুকে সদর হাসপাতালে দেয়া হয়েছে বিনামূল্যোর এ সেবা। নবজাতক ও শিশুদের জরুরী সেবা নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালে চালু হয় ৮ বেডের এ স্পেশাল কেয়ার ইউনিবর্ণ ইউনিট স্ক্যান। অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন এ ইউনিটে শ্বাসরোগ, অপরিপক্ষ ও কম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া নবজাতক ও শিশুদের ফলোআপ ও রেফারেল চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। দুইজন শিশু কনসালটেন্টের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক ও নার্স ২৪ ঘণ্টাই দিয়ে থাকেন এ সেবা। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা এ ইউনিটে পৌঁছা মাত্রই শুরু হয় প্রয়োজনীয় সেবা। স্ক্যানে প্রতিদিন অন্তত ২০টি শিশুকে দেয়া হয় চিকিৎসা। লক্ষ্মীপুরের ৫টি উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে আসে এসব শিশু।

নবজাতকের স্বজনরা বলেন, যেখানে প্রাইভেট হাসপাতালে এ সেবা নিতে নবজাতকের প্রতিদিন খরচ হতো ২০/৩০ হাজার টাকা। এর আগে আর্থিক অবস্থায় খারাপ থাকায় সময়মত চিকিৎসা দেয়া যেতনা। কিন্তু এইখানে বিনামুল্যে নবজাতকের এ চিকিৎসা সেবা নিতে পারায় খুশি স্বজনরা। এটি অব্যাহত থাকলে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় ও দুঃস্থ্যরা এ চিকিৎসা সেবা পাবে বলে আশা করেন স্বজনদের।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোয়ার সারমিন জানান, চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। পাশাপাশি নিরাপত্তার গার্ড না থাকায় অহরহ রোগীর স্বজনরা ভিতরে প্রবেশ করে। এতে করে নবজাতকের চিকিৎসা সেবা নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা পড়তে হয়। যেন সঠিকভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যায়, সেটাই প্রত্যাশা করেন চিকিৎসকরা।

সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ইছমাইল হাসান জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় ও দুঃস্থ্য পরিবারের নবজাতকের পাশাপাশি সকল নবজাতক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের চিকিৎসা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। এর আগে ঢাকা-চট্রগ্রাম ছাড়া নবজাতকের জন্য এ চিকিৎসা সেবা সদর হাসপাতালে পেতনা। বর্তমান সরকারের যে চ্যালেঞ্জ নবজাতকের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার। সেটাই সম্ভব হয়েছে। তাই সময়মত শিশুদের এ ইউনিটে ভর্তি করা গেলে শিশু মৃত্যুর হার শুন্যের কোটায় নেমে আসবে। এর পাশাপাশি বাড়িতে কিভাবে এসব নবজাতকের চিকিৎসা দেয়া হবে, সে বিষয়ে নানা পরামর্শ দেয়া হয়।

সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফ্ফার জানান, স্পেশাল কেয়ার ইউনিট চালুর পর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিমাসে ৭০/৮০ নবজাতক বিনামুল্যে এ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। সময়মত চিকিৎসা সেবা পাওয়া নবজাতকের মৃত্যুর হার কমেছে ৯০ ভাগ। ইতিমধ্যে এ চিকিৎসা সেবায় জাতীয়ভাবে পুরস্কারও পাওয়া গেছে। অসহায় ও দুঃস্থরা যেন এ সেবা পেতে পারে,সেটাই অব্যহত থাকবে বলে জানান তিনি।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন