|| অনলাইন প্রতিনিধি, সদর (ফেনী) ||
ফেনীতে বাড়ছে কোভিড ১৯ রোগীর সংখ্যা। শনিবার রাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দুইজন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও তিন পুলিশসহ এক দিনেই ৩১ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে দুই জনের মরনোত্তর কোভিড-১৯ পজেটিভ। এনিয়ে জেলায় মোট কোভিড ১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬১জনে। এর মধ্যে দুই চিকিৎসকসহ ৮ জন সুস্থ হয়েছেন। তিনজনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্তদের মধ্যে চারজন চিকিৎসক ও সেবিকাসহ ১৫ জন স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মচারী রয়েছে। যা আক্রান্ত রোগীর ৩০ শতাংশ।
কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়া দুইজন হলেন, সোনাগাজীর মিজানুর রহমান ও ফেনী সদর উপজেলার ৬০ বছরের নুরুন নাহার বেগম। তবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে দেরি হওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা।
গত শনিবার রাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে জেলায় যে ৩১ জন শনাক্ত হয়েছেন- তাঁদের দুইজন চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ১০জন কর্মকর্তা–কর্মচারী, একজন উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) তিনজন পুলিশ সদস্য রয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১৪জন, পরশুরামে ৪জন, ছাগলনাইয়ায় ৩জন, দাগনভূঁঞায় ৪জন, সোনাগাজীতে ৪জন ও ফুলগাজীতে ২জন।
নতুন আক্রান্ত ৩১ জনের মধ্যে ফেনীতে একজন চিকিৎসক ও অন্যরা স্থানীয় বাসিন্দা, ফুলগাজীতে একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও একজন স্বাস্থ্য কর্মী, পরশুরামে চারজনই স্বাস্থ্যকর্মী, ছাগলনাইয়ায় দুইজন স্বাস্থ্য কর্মী ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা, দাগনভূঁঞায় পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক, দুইজন কনষ্টেবল ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং সোনাগাজীতে একজন স্বাস্থ্যকর্মী (মরনোত্তর) ও তিনজন স্থানীয় বাসিন্দা।
গত ১৬ই এপ্রিল থেকে ১৫ই মে পর্যন্ত গেল এক মাসে ফেনী জেলায় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছিল ৩০ জন। ১৬ই মে একদিনেই দ্বিগুণের বেশী বেড়ে তা ৬১জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য দুইজন চিকিৎসকসহ ৮জন সুস্থ হয়েছেন। তিন জনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গত শনিবার রাতেই ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন সবশেষ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আক্রান্তরা সবাই হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁদের চিকিৎসার তদারকি করা হচ্ছে।
ফেনী স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৪৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম ভেটেরেনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ও নোয়াখালী আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৮৩৪ জনের ফলাফল পাওয়া যায়। এখনো ১১৫ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে।
ফেনীতে আক্রান্ত ৬১ জনের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ২২ জন, ছাগলনাইয়ায় ১২ জন, দাগনভূঁঞায় ৯ জন, ফুলগাজীতে ৪ জন, পরশুরামে ৪জন ও সোনাগাজীতে ৬ জন। তিনজন অন্য জেলার। একজন চট্টগ্রামের মিরসরাই, একজন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ও একজন নোয়াখালীর সেনবাগের।
জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্বেগের কথা জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ করেন।