|| সারাবেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ||
স্বামীর সন্ধানে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক গৃহবধূ। ধর্ষিতা ওই গৃহবধু স্বামীর সন্ধানে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে এসে পূর্ব পরিচিত ধর্ষকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আশ্রয়দাতা গৃহবধূকে রাতে আশ্রয় দিয়ে সকালে গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন ভিকটিম।
গত শনিবার (৭ নভেম্বর) খুলশী থানার লালখান বাজার মতিঝর্ণা ১৪ নম্বর গলিতে একটি ভাড়া বাসায় ধর্ষনের এ ঘটনা ঘটার একদিন পর গতকাল রোববার সকালে লালখানবাজার এলাকা থেকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মো. মনির হোসেন (৩৩) সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, স্বামীকে খুঁজতে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম নগরে আসেন ওই গৃহবধু। একসময় তিনি লালখান বাজারের মতিঝর্ণা এলাকায় স্বামীসহ ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে মাসখানেক আগে তিনি বাসা ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যান। গত শুক্রবার তিনি স্বামীর সন্ধানে চট্টগ্রাম আসলে পূর্বের পরিচিত প্রতিবেশী মনির হোসেন তার স্বামীকে খুঁজে দিতে সহায়তা করবে বলে তার নিজ বাসায় আশ্রয় দেয়। শনিবার সকালে মনিরের স্ত্রী গার্মেন্টেসে চলে গেলে খালি বাসায় থাকা মেয়েটিকে প্রথমে কুপ্রস্তাব দেন মনির। মনিরের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে মনির মেয়েটিকে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
ভীতসন্ত্রস্ত গৃহবধূ মনিরের বাসা থেকে বের হয়ে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে স্বামীকে খুঁজেন। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে দুপুরে মনিরের বাসায় ফেলে যাওয়া বোরকা নিতে আসেন। এসময় তাকে খারাপ আখ্যা দিয়ে আটকে রেখে মারধর ও পরে মনির হোসেনের সাথে তাকে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু মনির হোসেন ইতিপূর্বে ৬/৭টি বিয়ে করেছে এমন জনশ্রুতি থাকায় ঐ গৃহবধু রাজী হননি।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরের সহযোগী মুন্না, এমরান, দিদার, সোহেল, মাসুদ, রাজু, জাকির আবারো তাকে মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বখাটে রাজু। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার রাত আটটার দিকে স্থানীয় লোকজন গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
বর্তমানে ধর্ষিতা ঐ মহিলা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় খুলশী থানায় ভিকটিমের মনির হোসেনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ পেয়ে খুলশী থানা পুলিশ মূল আসামি মনির হোসেনকে একটি ধারালো ছুরিসহ আটক করেন। তার দেওয়া তথ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তার তিন সহযোগীকে মাসুদ (২০), দিদার (২২) ও সোহেল (২৪) আটক করে পুলিশ।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার নারী পরে ধর্ষকের সহযোগীদের হাতে মারধরেও শিকার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মূল অভিযুক্ত মনির হোসেনসহ মোট চারজনকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩)-এ মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও ধারালো ছুরি রাখার দায়ে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্রী আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা তাদেরকে মহানগর হাকিমের আদালতে সোপর্দ করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’