।। সারাবেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ।।
নিজেদের পেশা বাঁচাতে ও ঘাট ফিরে পেতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে চলছে সাম্পান মাঝিদের অনশন। যদিও সাম্পান মাঝিদের বলা হয় কর্ণফুলীর প্রাণপুরুষ। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একতরফা সিদ্ধান্তে বংশ পরম্পরায় শত বছর ধরে চলে আসা সেই পেশা আজ হুমকির মুখে।
বংশ পরম্পরায় শত বছর ধরে চলে আসা বাপ দাদার সেই বংশের ধারা ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং জন্মগত পেশাদার সাম্পান মাঝি (পাটনিজীবী) সমিতিকে ঘাট ইজারা না দেওয়ার প্রতিবাদে নিজেদের সাম্পান নিয়ে কর্ণফুলী নদীতে দিনব্যাপী অনশন করছে মাঝিদের ৮ টি সংগঠন।
মঙ্গলবার ২৫ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঘাটছাড়া করার প্রতিবাদে কর্ণফুলী সদরঘাটে অনশন করছে তিন শতাধিক মাঝি।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এসএম পেয়ার আলী জানান, অনশনের কারণে সকাল থেকে সব সাম্পানঘাট বন্ধ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে গত ১ বৈশাখ পাটনিজীবী নীতিমালা লঙ্ঘন করে পেশাদার সাম্পান মাঝিদের থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম। মাঝিরা এ অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৯ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রশাসন-২ শাখা থেকে পাঠানো পত্রে উপসচিব মো. ফজলে আজিম জন্মগত পেশাদার পাটনিজীবী সমিতিকে ঘাট ইজারা দেয়ার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন ঘাট মাঝিদের ইজারা দেয়ার অনুরোধ জানালেও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এ বিষয়ে পুনরায় আইনি মতামতের জন্য নির্দেশনাটি চসিক আইন কর্মকর্তার কাছে পাঠান। এরপর গত ছয় মাসেও মাঝিদের ঘাট ফিরিয়ে দেয়নি চসিক।
করোনার কারণে সাম্পান মাঝিরা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। তার ওপর নিজেদের ঘাট হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজারও মাঝি।
অনেকে বাপ-দাদা তিন পুরুষের এ পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে কর্ণফুলী থেকে সাম্পান চিরতরে হারিয়ে যাবে বলে জানান মাঝিদের আন্দোলনের সহযাত্রী চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান।
তিনি আরও বলেন ‘বলেন, চসিক মাঝি থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে চট্টগ্রামের কৃষ্টি সংস্কৃতির পরিপন্থি কাজ করছে। যা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না।’
আন্দোলনের আহ্বায়ক কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী বলেন, ‘২০০৩ সালের পাটনিজীবী নীতিমালা তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাটছাড়া করেছে চসিক। আামদের দেয়ালে পিট ঠেকে যাওয়ায় দিনব্যাপী অনশনের করতে হচ্ছে