|| সারাবেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম||
দীর্ঘ ২৩ দিন হোম আইসোলেশনে থাকার পর অবশেষে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পজিটিভ হবার পর দুই শিশু সন্তানসহ সম্পূর্ণ সুস্থ হলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান।
আজ রবিবার (২১ জুন) নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে করোনা মুক্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেন।
সেসাথে স্থানীয় সাংসদ ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ করোনাকালে যারা তাঁর খোঁজখবর রেখেছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৩০ মে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। এরপর সোমবার (১ জুন) দিনগত রাতে তাঁর রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। পরে মঙ্গলবার (২ জুন) রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলামের বরাত দিয়ে প্রথম জানা যায় ইউএনও মাসুদুর রহমান করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। তিনিই চট্টগ্রামের প্রথম ইউএনও যিনি প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর কয়েকদিন পর তার চার বছর এবং দুই বছর বয়সী দুই শিশুরও করোনা পজিটিভ এসেছিল। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি উপজেলার সরকারি বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসা নেয়ার দীর্ঘ ২৩ দিন পর তিনি সপরিবারে করোনা মুক্ত হন।
প্রসঙ্গত, একজন মানবিক ইউএনও হিসেবে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় মাসুদুর রহমান লকডাউন অবস্থায় মৃত্যুভয়ে ভীত এক জনপদে দিনরাত সমানে কাজ করে গেছেন। করোনাকালে তাঁর কাজ রাঙ্গুনিয়াবাসীর মন জয় করেছে। তিনি সকাল-সন্ধ্যা-রাত অবধি কাজ করেছেন। যখনই কোনো করোনা রোগীর খবর পেয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে গেছেন। লকডাউন করেছেন করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়ি। তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। সবসময় তাঁদের খোঁজখবর রেখেছেন। করোনা সংক্রমণরোধে উপজেলার হাটবাজার বন্ধসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাঁর এই সাহসী কাজের জন্য রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় করোনা সংক্রমণ ততটা ছড়াতে পারেনি। তিনি ভয়ভীতি দূরে রেখে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশে ছুটে গেছেন। করোনাভয়ে সবাই যখন নিজেকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টায় লিপ্ত, ঠিক তখনি এই মানুষটি নিজের পরিবারের নিরাপত্তার কথা না ভেবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তাঁর এমন সাহসী ভূমিকা নিসন্দেহে সকলের নিকট প্রশংসনীয় হয়েছে।
বিশেষ করে তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রভূত উন্নতি হয়েছে।