|| অনলাইন প্রতিনিধি, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) ||
অপরাধে বাধা দেয়ায় সিএনজি চালক আমজাদ হোসেন শিপকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। শিপনের বাড়ি উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের বসকরা গ্রামে। প্রতিপক্ষের লোকেলা শুধু শিপনকে নয়, কুপিয়েছে তার পরিবারের আরও ছয়জনকে।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার যুবক শাহ আলম, শাকিল, দিদারুল আলম ও শাকিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছেলেকে খুন করায় নির্দিষ্টভাবে ১০জন এবং অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেছেন মা মনোয়ারা বেগম।
মামলার আরজিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে। নিহত শিপন ও তার বাবা আমির হোসেন তাদের বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বিষয়টি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা শিপন ও আমির হোসেনকে হত্যার জন্য খুঁজতে থাকে।
রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আমির হোসেন, তার ছেলে শিপন ও আবু বক্করের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষের সশস্ত্র ১৫ থেকে ১৬ জন। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা নারী-পুরুষ সকলকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। হামলায় শিপনসহ আহত হন ৭ জন। তাদের সহায়তায় আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার শেষে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমজাদ হোসেন শিপনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ শিপনের মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং হামলায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করে। সোমবার লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মামলার আসামী ও আটক চারজন চার বছর আগে কৃষি জমিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে সোহাগকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। কিছুদিন পর সোহাগ মারা যায় বলে অভিযোগ করেছেন তার মা পারুল বেগম। এছাড়া একই গ্রামের আবুল কালাম হুন্ডি ব্যবসার আড়ালে বখাটেদের দিয়ে এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি চালিয়ে আসছে। তার নেতৃত্বে বখাটেদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
সোমবার সরেজমিন গেলে নিহত আমজাদ হোসেন শিপনের ভাই আবু বক্কর অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে কনকাপৈত ইউইনিয়ন পরিষদ সদস্য সোহেল মজুমদারের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করলে তিনি আমাদের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। এরমধ্যে আমরা ৫০ হাজার টাকা তাকে দিয়েছি। বাকি টাকা পরিশোধ না করায় মেম্বার সোহেল মজুমদার তাদের কোন বিচার করেননি। ইউপি সদস্যদের সামনেই সন্ত্রাসীরা আমার ভাই আমজাদ হোসেন শিপনকে কুপিয়ে হত্যা করে। তিনি একবারও সন্ত্রাসীদের বাধা দেননি।
নিজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সম্পর্কে কনকাপৈত ইউপি সদস্য সোহেল মজুমদার বলেন, ‘দেড় মাস আগে একটি দোকান ভাংচুরের ঘটনা মিমাংসার চেষ্টা করেছি। কেউ ঘটনাটি মিমাংসায় আসতে রাজি হয়নি।’ টাকা দাবির অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে সোহেল মজুমদার বলেন, ‘কুচক্রী মহলের প্রলোভনে পড়ে শিপনের পরিবার টাকা দাবির মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।’