।। সারাবেলা প্রতিনিধি, ভোলা ।।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগীদের জন্য সরবারহকৃত বিভিন্ন ধরনের ৪৮ পাতা ওষুধ গোপনে বাসায় নিতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা খেলেন হাসপাতালের নার্স তৃপ্তি রায়। তার বিরুদ্ধে এর আগেও সরকারি ওষুধ বাসায় নিয়ে বাহিরে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত তৃপ্তি রায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত থাকার সুযোগে এ অপকর্ম করে আসছে। রোববার দুপুরের হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বাড়ি নেয়ার পথে এলাকাবাসী তাকে বাঁধা দেয়। স্থানীয়দের বাঁধার মুখে বাসায় না গিয়ে পুনরায় হাসপাতালে এসে স্টোর কিপারের কাছে ওষুধগুলো ফিরিয়ে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তৃপ্তি রায় দীর্ঘ দিন ধরে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কাজ করছেন। যার কারণে সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানটির সকলের সাথে তার সুসর্ম্পক তৈরি হয়। এই সুবাদে তিনি বিভিন্ন সময় হাসপাতাল থেকে অবৈধভাবে ওষুধ বাড়ি নিয়ে যেতেন।
একই ভাবে রোববার হাসপাতালের বহির্বিভাগের ঔষধ সরবরাহ কেন্দ্র থেকে ৪৮ পাতা ওষুধ নিয়ে তিনি বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় পথে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে। পরে তাকে এত ওষুধ কোথায় ও কেন নিয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়ে দ্রুত আবার হাসপাতালে চলে যান। পরে স্থানীয়রা পিছু পিছু হাসপাতালের ওই কক্ষে ছুটে যান। এ সময় স্থানীয়রা তার হাতে থাকা বক্স ও ইউনিফর্মের পকেট থেকে বিভিন্ন ধরনের ৪৮ পাতা ওষুধ বের করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নার্স তৃপ্তি রানী রায় জানান, তিনি এসব ওষুধ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টিকেটের মাধ্যমে তার আত্মীয়-স্বজনদের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রয়োজনে মাঝে মাঝেই এভাবে ওষুধ নিয়ে যান বলে স্বীকার করেন তিনি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তপতি চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমি লোকের মুখে শুনেছি। তিনি যদি ওষুধ নিয়ে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুর রহমান জানান, বিষয়টি আমি শোনার সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তপতি চৌধুরীকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশে দিয়েছি।
ভোলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া একজন রোগী বা নার্স একসঙ্গে ৪৮ পাতা ওষুধ নিতে পারেন কি-না জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, তিনি নিতে পারেন না।