|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সদর (বরিশাল) ||
চলতি বর্ষা মৌসুমে বরিশালে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরার ফাঁদের কদর বেড়েছে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে। মাছ শিকারীদের পছন্দমত ফাঁদ তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ফাঁদ তৈরির কারিগররা। পাশাপাশি বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে বাইন্না, চাই-বুচনা বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বর্ষায় বিলাঞ্চলে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে শিকারীরা নানা প্রজাতির ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকার করে থাকেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ফাঁদ বিক্রি হচ্ছে জেলার গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে।
গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া বাজারের ব্যবসায়ী স্বপন ঘরামী ও সুনীল দেওয়ান জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে তিনি মাহিলাড়া হাটে বাইন্না চাই-বুচনা বিক্রি করে আসছেন। নিজে এবং বিভিন্ন এলাকার কারিগর এনে ফাঁদ তৈরি করে প্রতি বুধ ও শনিবারের হাটে বিক্রি করেন। পূর্বে বাঁশ ও কারিগরদের শ্রমের মূল্যে কম থাকলেও সময়ের ব্যবধানে সবকিছুর মূল্যে বেড়েছে। ফলে ফাঁদের দামও কিছুটা বেড়েছে। এরমধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় দূরদূরান্তের ক্রেতারা কিছুটা কম আসছেন। ফলে গত বছরের চেয়ে এবছর বিক্রি কিছুটা কম হচ্ছে।
মাহিলাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, মাহিলাড়া হাট থেকে পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও কালকিনি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় সড়ক ও নৌ-পথে প্রতি হাটে ক্রেতারা এসে পছন্দমত ফাঁদ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে আগে যেমন ক্রেতা ছিল এখন সেই তুলনায় অনেকটাই কম। এছাড়া যান্ত্রীকতা ভর করায় আগের মত ফাঁদ পেতে মাছ শিকার এর দৃশ্য এখন বেশ কমে যাচ্ছে। জীবিকার তাগিদে বর্ষার মৌসুমে এখন হাতে গোনা কিছু মানুষ ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করেন। আর কেউ করেন নিছক শখের বশে। তাই গ্রামবাংলার শত বছরের পুরোনো এই ঐতিহ্য এখন অনেকটাই সিমাবদ্ধ হয়ে এসেছে। বর্তমানে নানা কারনে বেচা বিক্রিতেও তেমন লাভবান হওয়া যাচ্ছে না। এক কথায় বলতে গেলে এসব বিক্রি করে শ্রমের মূল্য আসে না।