|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বরিশাল ||
হাটের সংখ্যা কম হলেও পশু কোরবানী হবে, তাই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পাড় করেছেন বরিশাল শহরের হাটখোলা কামারপল্লীর সকল কামাররা। লোহা পেটানোর শব্দে এখন অনেকটাই উৎসবমূখর পরিবেশ পল্লীতে। কারন কদিন বাদেই ঈদুল আযহা। করোনার প্রাদুর্ভাবে প্রতি বছরের তুলনায় কাজের চাপ অনেকটাই কম এবার। তার পরেও যে কাজ আছে তাতে সাচ্ছন্দে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেখানের কামাররা।
বরিশাল নগরের হাটখোলা, নতুনবাজার, বাংলাবাজার, নথুল্লাবাদ, চাঁদমারী, পলাশপুর বৌ-বাজার, বেলতলা, তালতলী বাজার, সদর উপজেলার চরকাউয়া, সাহেবেরহাট, লাহারহাট, কাশিপুর বাজার, কড়াপুর বৌসের হাটসহ ছোট-বড় সব হাটের কামাররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে শুরু করে কাজ চলছে রাত পর্যন্ত।
পলাশপুর বৌ-বাজারের আমল কর্মকার বলেন, ‘ঈদের আগে কাজের চাপ বেড়েছে। তবে প্রতিবারের চেয়ে কম। এজন্য বর্তমানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছি। আগে খুব ভোরে দোকানে আসতাম আর বাড়ি যেতাম গভীর রাতে। এখন তারাতারি কাজ শেষ করে চলে যাই। গড়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি কাজ করে হাজার দেড়েক টাকা আয় হচ্ছে ২/৩ দিন ধরে। পূর্বে বেশি আয় হতো।
তিনি আরো বলেন, একটি বড় দা পাঁচ কেজির লোহা দিয়ে তৈরি করেন মজুরিসহ ৮০০ টাকায়, এক কেজি ওজনের কুড়াল ৩ শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা, চাপাতি প্রকার ভেদে ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, বিভিন্ন আকারের ছোরা ৩৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা করে নিচ্ছেন। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্য সময়ের চেয়ে এখন চাপাতি, চাকু, ছুরির দাম বেশি রাখা হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরের কামারপট্টির কামারদের এখন কাজের চাপ কিছুটা বেশি।
হাটখোলার সঞ্জয় কর্মকার বলেন, ‘সারাবছরই আমাদের তৈরি জিনিসের কমবেশি চাহিদা থাকে। তবে ঈদে পশু কোরবানীর জন্য নতুন ছুরি, চাপাতি, চাকুর কদর প্রতি বছরই বেড়ে যায়। কিন্তু এবছর করোনার কারনে চাহিদা কম। তার পরেও কিছু তৈরি করে রাখছি।
কড়াপুর হাটের অজয় কর্মকার বলেন, ‘আগে অন্য হাট-বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন লৌহজাত জিনিস বানিয়ে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা রোজগার হতো। তবে ঈদের আগে লোহার অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন হাজার টাকা থেকে ১২ টাকা আয় হচ্ছে। ঈদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে এবছর সময় কম লাগছে। এবছর আমি নতুন কাজের অর্ডার নেয়া বন্ধ করেনি। গতবছর এসময় অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ব্যস্ততা থাকবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।