হবিগঞ্জে পত্রিকা অফিস ও সম্পাদকের শ্বশুরবাড়িতে হামলা ভাঙ্গচুর জখম

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবু জাহিরের নির্দেশেই স্থানীয় ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এসব হামলা ও ভাঙ্গচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ এমপির বিরুদ্ধে

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||

হবিগঞ্জে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকা অফিসে হামলা করা হয়েছে। মারধর ও জখম করা হয়েছে বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীকে। হামলা ও ভাঙ্গচুর করা হয়েছে পত্রিকাটির সম্পাদকের শ্বশুরবাড়িতেও। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবু জাহিরের নির্দেশেই স্থানীয় ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এসব হামলা ও ভাঙ্গচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার ১৯শে এপ্রিল বেলা ১ টার দিকে শহরের চিড়াকান্দিতে পত্রিকাটির অফিসে হামলা চালানো হয়। অভিযোগ উঠেছে সদর থানার ওসি মাসুক আলী ও তার সহকর্মী পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই এই হামলা চালানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দুপুর থেকেই জেলা যুবলীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহির নেতৃত্বে নোয়াবাদ, শংকরের মুখসহ দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার অফিসের ঢোকার রাস্তার আশেপাশের বিভিন্ন পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয় যুবলীগ -ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে পত্রিকা অফিসের দিকে এগুতে থাকে তারা। পথি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সুশান্ত দাস গুপ্তের শ্বশুরের বাসাতে হামলা চালায়। বাসার বিভিন্ন দরজা জানালা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এমনকি বাসার পানির ট্যাঙ্কি ও পানির পাইপ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। বাসায় থাকা তার বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ি ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আসবাবপত্র ভাঙচুর করে লুটপাট করা হয় মূল্যবান জিনিসপত্র।

এসময় দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ওই বাসার ছাদের উপরে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তিনি তার লোকদের নিয়ে হামলার মোকাবেলা করেন। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে চলে এই হামলাযজ্ঞ। যজ্ঞশেষে যাওয়ার সময় আশেপাশের প্রায় ১০ থেকে ১৫টি হিন্দু বাসা-বাড়িতে হামলা করে যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আর নিচে থাকা যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমের নেতৃত্বে তার কর্মীসমর্থকরা দৈনিক আমার হবিগহঞ্জ সম্পাদক সুশান্ত দাস গুপ্তকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

অন্যদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহির নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা পত্রিকা অফিসে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। অফিসে ঢুকতে না পেরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অফিসে থাকা পত্রিকার ৪ থেকে ৫জন সাংবাদিক ইটের আঘাতে আহত হন।

প্রথম দিকে কোন ব্যবস্থা না নিলেও পরে অবস্থা বেগতিক দেখে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মাসুক আলীর নেতৃত্বে পুলিশ যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকা অফিসে হামলা চালায় তারা। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশসহ র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একটি মন্দিরের জায়গা দখল নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবু জাহিরকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ। এই সব সংবাদের জের ধরেই এমপি আবু জাহিরের নির্দেশে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকা অফিসে হামলা ও সম্পাদক সুশান্ত দাস গুপ্তকে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে এসব হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

সংবাদ সারাদিন