|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||
হবিগঞ্জে তিন পৌরসভায় বিএনপির কাছে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। কোন্দল, একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী, প্রার্থী মনোনয়নে দুর্বলতা, নির্বাচনপূর্ব সংঘর্ষসহ বিভিন্ন কারণে এ বিপর্যয় বলে নেতাকর্মীদের অভিমত। এর মধ্যে মাধবপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। হারাতে হয়েছে জামানত।
শনিবার নবীগঞ্জ ও মাধবপুরে পৌর নির্বাচনে পরাজিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। নবীগঞ্জে বিএনপি প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী পাঁচ হাজার ৭৪৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৪৮৫ ভোট।
মাধবপুর পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়র বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান মানিক পাঁচ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী শ্রীধাম দাশ গুপ্ত পেয়েছেন ৫৬৮ ভোট। ওই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুই প্রার্থী পংকজ কুমার সাহা চার হাজার ১৫৬ ও শাহ মোহাম্মদ মুসলিম তিন হাজার ৪৯ ভোট পেয়েছেন।
এর আগে ২৮শে ডিসেম্বর শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায়ও আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিএনপির কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ওই পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ফরিদ আহমেদ অলি চার হাজার ৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুক তিন হাজার ১৪১ ভোট। বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র ছালেক মিয়া দুই হাজার ৫৯৯, ফজল উদ্দিন তালুকদার এক হাজার ৫১০, আবুল কাশেম শিবলু এক হাজার ৪৩০ ভোট পান।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক বলেন, একদিকে দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী অন্যদিকে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এগিয়ে না আসায় নৌকার পরাজয় ঘটেছে।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ মো. সেলিম বলেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থী মনোনয়ন করায় নৌকাকে এগিয়ে নেয়া যায়নি।
মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকোমল রায়ের মতে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তির কাছে নৌকা মার্কা তুলে দেওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাহিদ আহমেদ প্রশাসনের অসহযোগিতাকে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় হিসেবে দাবি করছেন। এ ছাড়া কালো টাকার ছড়াছড়িও এর কারণ বলে উল্লেখ করেন তারা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী বলেন, জেলা থেকে প্রার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। প্রার্থীর পরিচিতির ক্ষেত্রে দুর্বলতা, একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী, নবীগঞ্জে নির্বাচনের আগে সংঘর্ষ, দলীয় কোন্দলসহ নানা কারণে পৌর নির্বাচনে আমাদের বিপর্যয় ঘটেছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো মতামত নেন না।