হত্যামামলা সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৮জনের বিরুদ্ধে সবাই আটক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম, হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনকে আসামী করে মামলা করেছে পুলিশ।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ ||

মামলা হলো সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ তথা সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ জন নিহতের ঘটনায়। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম, হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনকে আসামী করে মামলা করেছে পুলিশ।

এরআগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম ও প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদসহ আট জনকেই আটক করে পুলিশ।

এরও আগে শনিবার ১০ই জুলাই দুপুর ২টার দিকে আগুনে পুড়ে যাওয়া কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেজান জুস কারখানায় আগুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ আট জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের তদন্তে কারখানা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে সকালে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আট জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একই সঙ্গে ৫২ জন মানুষ নিহতের ঘটনায় হত্যামামলা করবে পুলিশ।

অবশ্য এর আগে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেছিলেন, ৫২ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। যেহেতু ৫২ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন সেহেতু এটি হত্যামামলা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করবে। মামলার পর বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। 

পুলিশ সুপার আরও বলেছিলেন, আগুন লাগার কারণ খুঁজতে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। আগুন কীভাবে লাগলো, কেন আগুন এতোটা ভয়াবহ রুপ নিলো, কেন এত শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটেছে, কেনই বা আগুন লাগার পর শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হতে পারেননি। এটি দুর্ঘটনা, নাকি নাশকতা সবই তদন্ত করে উদঘাটন করা হবে।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার ৮ই জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুন লাগে। কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।

প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার ৯ই জুলাই দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, আগুনে পুড়ে মারা যায় তিন জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় পঞ্চাশজন। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সারাদিন