সড়কে বারোজনের মৃত্যু

দুটো সড়ক দুর্ঘটনাই শুক্রবার সকালের। একটি ঘটেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুরে। সেখানে দুইবাসের সংঘর্ষে প্রাণ গেছে আটজনের। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। অন্যটি বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার মাজিরাতে। এতে নিহত হয়েছেন অটোচালকসহ চারজন।

|| বার্তা সারাবেলা ||

দুটো সড়ক দুর্ঘটনাই শুক্রবার সকালের। একটি ঘটেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুরে। সেখানে দুইবাসের সংঘর্ষে প্রাণ গেছে আটজনের। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। অন্যটি বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার মাজিরাতে। এতে নিহত হয়েছেন অটোচালকসহ চারজন।

সিলেটে নিহত আট

সিলেটের সুরমা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলামের বরাতে আমাদের সিলেট প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা থেকে সিলেটমুখি লন্ডন এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে সিলেট থেকে ঢাকামুখি এনা পরিবহনের একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয় জন মারা যান। পরে হাসপাতালে মারা যায় শিশুসহ আরও দুইজন।

শুধু যাত্রীই নন, এই দুর্ঘটনায় দুই বাসের চালক এবং এনা পরিবহনের চালকের সহকারীও নিহত হয়েছেন। নিহত যাত্রীদের মধ্যে একজন ইমরান খান। তিনি সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রভাষক। বাকিদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বগুড়ায় নিহত চার

শুক্রবার ভোরে জেলার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়ায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় একটি অটোরিকশা দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিন অটোরিকশাযাত্রী ও অটোরিকশাচালক।

নিহতদের দুই জন হলেন-বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ডেমাজানি গ্রামের ক্ষিতিশ চন্দ্র দাসের ছেলে কালী দাস। তার বয়স ৭২। আরেকজন ধুনট উপজেলার আনারপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে শাহ্ জামাল। তার বয়স ৩৪। নিহত সিএনজি চালক ও আরেক যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ নিহতদের উদ্ধার করেছেন। এ সময় অন্তত আধা ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়।

বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার বজলুর রশিদ জানান, শুক্রবার সকালে বগুড়ার শেরপুর থেকে তিন যাত্রী নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালক বগুড়া শহরের দিকে আসছিলেন। ভোর ৬টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়াতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে পৌঁছলে শাওন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। বাসটি ঢাকা থেকে গাইবান্ধা যাচ্ছিল। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তিন জন নিহত হন।

খবর পেয়ে বগুড়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করেন। আহত একজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার বজলুর রশিদ জানান, তাৎক্ষণিকভাবে অটোরিকশার নিহত চালক ও এক যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সরকার ও আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বগুড়ায় দুটি মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ হয়নি। দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু সদস্যরা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এসব অবৈধ যান চলাচলে সহযোগিতা করেন। গ্যাস তোলার অজুহাতে থ্রি-হুইলারগুলো দিনরাত মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়ায়। এতে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

স্থানীয়দের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে হাইওয়ে পুলিশ শেরপুর ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর বানিউল আনাম জানান, সকাল ৮টা পর্যন্ত গ্যাস তোলার অনুমতি থাকলেও থ্রি-হুইলারগুলো নির্দেশ অমান্য করে সারাদিনই মহাসড়কে চলাচল করে থাকে। প্রায় প্রতিদিন ১৫-২০টাসহ গত মাসে ৩৫০টি থ্রি-হুইলার জব্দ করা হয়েছিল। মালিকরা জরিমানা দিয়ে আবারও মহাসড়কে যাত্রী বহন করে থাকে। তিনি জানান, এসব অবৈধ যান ধ্বংস করার অনুমতি না থাকায় এদের রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ইন্সপেক্টর বানিউল আনাম আরও জানান, দুর্ঘটনা যখন ঘটেছে, ওই সময়ে মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি ছিল।

সংবাদ সারাদিন