সেজান জুস কারখানার মালিক হাসেম নজদারিতে হচ্ছে মামলা

“মামলার প্রস্তুতি চলছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে মামলা হবে।” এরই মধ্যে মালিকসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। একইসঙ্গে ডিআইজি হাবিবুর এও বলেন, “কোনো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি চাইলে মামলা করতে পারেন, না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।”

|| সারাবেলা প্রতিবেদক ||

নারায়ণগঞ্জের সেজান জুস তথা হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫০ জনের বেশী মানুষ মারা যাওয়ায় অভিযোগে মামলা হচ্ছে কারখানার মালিক সজীব গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে। তবে আগুনে এতোগুলো মানুষ মারা যাওয়ার পর হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে অর্ধ শতাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কারখানার মালিক সজীব গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম

পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “মামলার প্রস্তুতি চলছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে মামলা হবে।” এরই মধ্যে মালিকসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। একইসঙ্গে ডিআইজি হাবিবুর এও বলেন, “কোনো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি চাইলে মামলা করতে পারেন, না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।”

এই ঘটনা পর পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে জানিয়ে অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই নজদারিতে থাকা কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার ওই কারখানায় আগুন লাগার পর এরই মধ্যে ৫২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আগুন পুরোপুরি নেভানোর পরও শনিবার সকালেও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছিল।

নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আবির হোসেন শনিবার সকালে জানান, ফায়ার সার্ভিস এখনও ওই ভবনে কাজ করছে। আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে কারখানাটি তাদের বুঝিয়ে দেবে।

তিনি জানান, ভবনটি বুঝে পাওয়ার পর মামলা করার আগেই তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিদর্শন করবেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগুনের ঘটনার সময়ে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী কারা কোন দায়িত্বে ছিলেন, তাদের তালিকা তৈরিরও কাজ চলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এরই মধ্যে মালিকসহ একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে। তার ভিত্তিতে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”

সেজান জুস তথা হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনের পর সেখানে ত্রুটিপূর্ণ অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, জরুরি নির্গমন পথে তালা লাগানো ছিলো বলেও জানিয়েছে দমকলসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কারখানাটিতে শিশু শ্রমিকদের দিয়েও কাজ করানো হতো বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, মামলায় দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৪ (ক), ৩০৭, ধারাগুলো আসতে পারে। এসব ধারায় অবহেলাজনিত হত্যার বিষয়গুলো রয়েছে।

কারখানার মালিক সজীব গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম অবশ্য এসব অভিযোগ স্বীকার করতে চান না। তিনি ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করে। সেখানে আগুন লাগতেই পারে। সেখানে আগুনে পুড়ে এতোগুলো মানুষ মারা যাওয়ার কোন দায় তার নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “এই কারখানা কম্পাউন্ডে আমরা ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। দুই হাজারের বেশি শ্রমিকের সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে। নিয়মকানুন মেনেই আমরা ব্যবসা করছি। কিন্তু শেষ জীবনে এসে বড় পরীক্ষার মুখে ফেলে দিল এই অগ্নিকাণ্ড।”

সংবাদ সারাদিন