সিনহা হত্যায় অভিযোগপত্র দিলো র‌্যাব অভিযুক্ত ১৫জন

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার ||

কক্সবাজারের পুলিশ চেকপোস্টে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া ক্যাম্পের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‍্যাব-১৫ তে দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম রোববার সকালে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারার আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন। তিনি বলেন, “এ মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ জন আসামি ছাড়াও আরও একজনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে।”

গত ৩১শে জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন দুই সঙ্গীকে নিয়ে।

কক্সবাজারের পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।

কিন্তু পুলিশের দেওয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২রা অগাস্ট উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগগুলোও নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু থাকে।

সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস ৫ই অগাস্ট ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ নয় জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করলে র‌্যাবকে তদন্তভার দেন বিচারক।

তাদের মধ্যে সাতজন পরদিন কক্সবাজারের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের মামলার তিন জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল ছাড়া ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এই ১৪ জনের বাইরে টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে।

ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্যদের ইতোমধ্যে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার পর কক্সবাজারের পুলিশকে নতুন করে সাজানো হয়। এসপি থেকে কনস্টেবল- প্রায় সব পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হয়েছে অন্য জেলায়।

এদিকে সিনহার বোনের করা মামলা ‘অবৈধ’ দাবি করে তা বাতিল চেয়ে রিভিশন আবেদন করেছেন মামলার প্রধান আসামি পরিদর্শক লিয়াকত আলী। রোববার এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন