সালিসসময়েই ছুরি মেরে প্রতিপক্ষের দুজনকে খুন

নিহত সাকিবের বড় বোন সাথী আক্তার বলেন, সালিসে তাঁর মা–বাবাও গিয়েছিলেন। তাঁর ভাই সাকিব মাফ চাওয়ার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজনের পায়ে ধরেছিল। ওই সময় ভাইকে ছুরি মারা হয় বলে তিনি জানান। তিনি ভাই হত্যার বিচার চান।

মুন্সীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের মারামারি

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ ||

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই পক্ষের মারামারি নিয়ে সালিসসময়েই ছুরি মেরে প্রতিপক্ষের দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার রাত ১১টার দিকে শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন মো. ইমন হোসেন (২২) ও মো. সাকিব হোসেন (১৯)। ইমন উপজেলার উত্তর ইসলামপুর এলাকার কাশেম পাঠানের ছেলে। সাকিব একই এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত মিন্টু প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নিহত ইমন পাঠান ও সাকিব মিয়া

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এলাকায় কিশোর-তরুণদের কয়েকটি দল আছে। আধিপত্য নিয়ে এসব দলের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা বাধে। মারামারিও হয়। একইভাবে বুধবার বিকেলে একটি পক্ষের সৌরভ ও অভিদের সঙ্গে অন্য পক্ষের ইমন ও সাকিবদের কথা–কাটাকাটি হয়। এ সময় উভয় পক্ষ হাতাহাতি–মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে রাত ৯টার দিকে সালিসে বসে দুই পক্ষের লোকজন। সালিসের একপর্যায়ে সৌরভদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন ইমনদের পক্ষের লোকজনকে মারধর শুরু করে। সে সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ইমন, সাকিব ও মিন্টু প্রধান। রাত ১১টার দিকে তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ১২টার দিকে মারা যান সাকিব।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফেরদৌস জানান, গতকাল (বুধবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে এক তরুণ মৃত ছিলেন। অপর দুজন গুরুতর আহত ছিলেন। ওই দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত সাকিবের বড় বোন সাথী আক্তার বলেন, সালিসে তাঁর মা–বাবাও গিয়েছিলেন। তাঁর ভাই সাকিব মাফ চাওয়ার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজনের পায়ে ধরেছিল। ওই সময় ভাইকে ছুরি মারা হয় বলে তিনি জানান। তিনি ভাই হত্যার বিচার চান।

মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো একটি বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছিল। গতকাল (বুধবার) রাতে এ নিয়ে সালিস বসে। সেখানেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৮ থেকে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। যারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সংবাদ সারাদিন