|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) ||
পায়খানা নির্মাণের সামর্থ্য নেই, তাই ঝোঁপঝাড়ই ভরসা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার একটি পাড়ার ৩২টি পরিবারের। টাকা না থাকায় খাবার পানি ও পায়খানা নির্মাণ করতে পারছে না এখানকার মানুষ। পাচ্ছেন না সরকারী সহায়তায়ও। তাই বাধ্য হয়ে রাতের অন্ধকার সরে যাবার আগেই এসব পরিবারের নারী পুরুষ মিলে প্রায় দেড়শ মানুষকে খোলা আকাশের নিচে সেরে নিতে হয় প্রাকৃতিক কাজকর্ম।
এভাবে যত্রতত্র পায়খানা করায় দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে বাড়ছে ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ নাননো পানিবাহিত রোগ।নেকমরদ ঘনশ্যামপুর মৌজার একটি পুকুর ও সংলগ্ন পাড় সরকারী সম্পত্তি হওয়ায় গত বছরের জুন মাসে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভুমিহীনদের পূর্ণবাসনের ব্যবস্থাা করেন,তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার সোহাগ চন্দ্র সাহা।
ভুমিহীনদের মধ্যে রয়েছেন আদিবাসী হিন্দু মুসলমি ও হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ। মিলেমিশে বসবাস করলেও স্বাস্থ্যাসম্মত স্যানিটেশনের অভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন তারা ।
পাড়ার মালতি রাণিসহ অনেকেেই বলেন, গত বছরে এনজিও ইএসডিও’র সহায়তায় এবং আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার সোহাগ চন্দ্র সাহা এখানে আমাদের বাসস্থাানের জন্য তিনশতক জায়গা নির্ধারণ করে ৩২টি পরিবারকে বসবাস করার সুযোগ করে দেন।
তারা জানান, ঋণ করে মাথা গোঁজার ঘর করলেও টাকার অভাবে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যাসম্মত টয়লেট তৈরি করতে পারছেন না। স্থাানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী দফতরে ধরনা দিয়েও সরকারীভাবে স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেনি তারা। স্থাানীয়রা মিলে মিশে কিছু ছোট সাইজের টিউবওয়েল স্থাপন করে পাড়ার পানি সরবরাহের ভোগান্তি কিছুটা কমানো গেছে বটে। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তৈরি করতে পারেনি স্বাস্থ্যা সম্মত টয়লেট। তারা বলেন, দেশের নাগরিক হয়েও আমরা অবেহেলিত। কেউ আমাদের খোঁজ রাখে না। যা করতে হয় তা লড়াই করেই আদায় করে নিতে হয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্যা প্রকৌশলী অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ১৩টি গুচ্ছগ্রামকে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় আনতে ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। অনুমোদন পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না মুঠোফোনে বলেন, এখনো মানুষ ঝোঁপঝাড়ে পায়খানা করছে এটা ভাবতে অবাক লাগছে। বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে অব্যশই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাা নেবো।