|| খায়রুল ইসলাম সাব্বির,হবিগঞ্জ ||
উৎসব আমেজের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে হবিগঞ্জ পৌর নির্বাচনের সবধরণের প্রচার প্রচারণা। ভোর হলেই শনিবার সকালে শুরু হচ্ছে হবিগঞ্জ জেলার দুই পৌরসভায় ভোটযুদ্ধ। হবিগঞ্জের মাধবপুর এবং নবীগঞ্জ এই দুই পৌরসভায় ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহন চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
দীর্ঘদিন পর নির্বাচনের আমেজ ফিরে এসেছে পৌরবাসীর মধ্যে কে হবে আগামী জনপ্রতিনিধি এ নিয়ে পাড়া-মহল্লায় চলছে নানা ধরনের গুঞ্জন।
শুধু তাই নয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুটি পৌরসভায় ঘটেছে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা এ নিয়ে আরো বেশি আতংকে রয়েছে সাধারণ ভোটাররা।
শুক্রবার ১৫ই জানুয়ারি সকালে হবিগঞ্জে মাধবপুর পৌরসভা এবং নবীগঞ্জ পৌরসভা সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেষ সময়ে এসে ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা, দফায় দফায় চলছে, দলীয়, বিরোধী এবং সতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের শেষ পথসভা,প্রার্থীদের গন সংযোগ গুলো ছিল চোখে পড়ার মতো।
গত কয়েক দিন আগে নবীগঞ্জ পৌরসভায় নৌকার পথসভার সময়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, এ নিয়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে চলে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়েছে তিন ছাত্রলীগ কর্মী। এ নিয়ে নবীগঞ্জের বিএনপির সাবেক এমপিকে আসামী করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন তারা, এ ধরনের ঘটনা নিয়ে এলাকায় চলছে নানা ধরনের আলোচনা।
এ দিকে মাধবপুরের ভোটে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বিএনপি, তবে কে হবে আগামী পৌরসভার কান্ডারী এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আছে সকল মেয়র প্রার্থীরা, মাধবপুর পৌরসভার নির্বাচনের প্রচারনা চলাকালীন গত বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, অল্পের জন্যে বেঁচে গেছেন হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসানসহ আরো অনেকেই, তবে তারা ধরনা করছেন বিএনপি এবং বিদ্রোহী প্রার্থীরা মিলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
মাধবপুর পৌরসভা
ব্যালটের মাধ্যমে, এই পৌরসভার ৯টি ভোট কেন্দ্রে ৪ জন মেয়র প্রার্থী এবং ৩৭ জন কাউন্সিলর নির্বাচন করতে ভোট দেবেন এলাকাবাসী। সমান তালে ভোট চলবে বিকেল পর্যন্ত।
জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায় মাধবপুর পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৯৮৭ জন এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৮১০৭ জন এবং মহিলা ভোটার ৭৮৮০ জন।
মেয়র প্রার্থী চারজন হলেন (নৌকা প্রার্থী) শ্রীধাম দাশ গুপ্ত, (বিএনপি) মনোনীত মেয়রপ্রার্থী হাবিবুর রহমান মানিক, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) পংকজ কুমার শাহ, বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মুক্তিযাদ্ধা সাবেক মেয়র শাহ মো. মুসলিম এবং কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন ৩৭ জন।
নবীগঞ্জ পৌরসভা
সময় যত কাছে আসছে ভোটারদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে কখন যেন কী হয়। এদিকে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট হবে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত। নবীগঞ্জে পৌরসভার ৩ জন মেয়র এবং ৪০ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে চলবে ভোট যুদ্ধ।
জানা যায়, নবীগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১৮ হাজার ৬শ’ ৯৯ জন। নবীগঞ্জ মেয়র প্রার্থী তিনজন (নৌকা) গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরী, (ধানের শীষ) নিয়ে লড়ছেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী ও (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা মিনিবাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম সুমন এবং কাউন্সিল পদে নির্বাচনে করবে ৪০ জন প্রার্থী।
হবিগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃখলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আশা করছি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে এবং রাত হলেই পৌসভার নির্বাচন কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ব্যালট পেপার, দুই পৌরসভায় ৭ জন মেয়র প্রার্থী এবং ৭৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানান তিনি।
এই দুই নির্বাচন শেষ হলেই জমে উঠবে চুনারুঘাট উপজেলা পৌরসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা । এ দিকে বদলী প্রতীক নিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছে প্রার্থীরা, এবং সরকারি প্রতীক পাওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চলছে প্রচার প্রচারণা।