|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ ||
কিছু লোকের অপতৎপরতায় ব্যাহত হচ্ছে নওগাঁর নজিপুর সরকারী কলেজে ৬ তলা ভবনের নির্মান কাজ। এমন অভিযোগ করে কলেজ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় একটি মহলের অপতৎপরতায় নির্মাণকাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদার।
প্রসঙ্গত, আধুনিক মানের একটি কলেজ ভবন নির্মান করতে চলতি বছরের শুরুতে বরাদ্দ আসে প্রায় সাত কোটি টাকা। গত ২৫শে ফ্রেবুয়ারি ওয়ার্ক অর্ডার পায় দেওয়ান আলী এন্ড জেভি কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠান। এরপর গত ১৮ই আগষ্ট ৬ তলা ভবন নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন নওগাঁ-পত্নীতলা আসনের সংসদ সদস্য ও বিদ্যুত জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. শহিদুজ্জামান সরকার। এরই মাঝে ভবনের নকশাতে ঘটে বাড়তি কিছু সংযোজন।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বলছে, নতুন কাঠামোয় যুক্ত হয় লিফট। তাছাড়া ১২০ ফিট লম্বা মূল ভবনের পরিসর দুইপ্রান্তে আরো বাড়ানো হয় ১৬ ফিট। কলেজ কর্তপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই কলেজের একাংশে ভবন নির্মানের জন্য বেছে নেওয়া হয়। কলেজের মুল মাঠ ঠিক রেখে আধুনিক এ ভবন নির্মান কাজ শুরু হলে স্থানীয় কিছু মানুষ এর বিরোধিতায় নামেন। মাঠ নষ্ট হচ্ছে এমন কারণ দেখিয়ে তারা নির্মাণকাজ বাতিলের ষড়যন্ত্র করতে শুরু করে।
কলেজ উন্নয়ন ও ভবন নির্মান কমিটির সভাপতি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. রুকনুজ্জামান বলেন, কিছু মানুষ শুরু থেকেই কলেজের এই সম্প্রসারণের বিরোধিতা কওে আসছিল। তারাই এখন মাঠ নষ্ট হচ্ছে এমন কারণ দেখিয়ে ভাবনটি না হোক সেই অপৎতপরতা অব্যাহত রেখেছে। মাঠের পরিসর কমছে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, মাঠের জায়গা পর্যাপ্তই থাকছে। তা ছাড়া এটা কোন পাবলিক মাঠ নয় যা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত। কলেজের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী রয়েছে যারা বিষয়টির সঙ্গে একমত হয়ে ভবন উন্নয়নের পক্ষে আন্দোলন করছে। কিন্ত বহিরাগত কিচু মানুষ মাঠ বাঁচানোর ধুয়া তুলে ভবন নির্মান কাজ বন্ধের পাঁয়তারা করছে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ও উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসকও সরজমিনে নির্মাণকাজ দেখে গেছেন। শিক্ষা প্রকৌশল অধিপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ এ প্রসঙ্গে বলেন, যারা মাঠ নিয়ে কথা বলছে আসলে তারা না বুঝেই কথা বলছে। কলেজ মাঠটি সমুন্নত রেখে পরবর্তী ভবন নির্মানের নকশা করা হয়েছে। ১৪৬ ফিট ভবনের বাইরে বিশাল মাঠ থাকছে। তিনি আরো বলেন, ১৮ মাসের মধ্যে ভবন নির্মান কাজ বুঝে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু ইতোমধ্যে টেন্ডার আহবানের ৮ মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। এতে করে প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে শংকাও জানান তিনি।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাঈদুর রহমান জানান, কলেজের মাঠ নিয়ে যারা কথা বলছে আসলে তারা কলেজের কেউ নয়। তারা বহিরাগত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে উন্নয়ন কাজ বাঁধাগ্রস্থ করতে প্রশাসনের কানে ভুলভাল তথ্য দিচ্ছে।
পত্নীতলা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল গাফফার চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, সরকারের উন্নয়ন কাজ থমকে দিতেই সব সময় একটি মহল অপতৎপরতা চালিয়ে থাকে। নজিপুর কলেজে আধুনিক মানের ৬ তলা ভবন হোক তা বিরোধীমতের লোকজন চায় না। এ কারণে ঠুনকো একটি বিষয় নিয়ে আন্দোলন করে প্রকল্পটি বাতিল করার ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। প্রকল্পটি বাতিল করতে যারা নানাভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছে তাদেরকে আমলে নিতে গিয়ে যেনো সরকারের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য তিনি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।
এদিকে বিরুদ্ধমহলের অপতৎপরতা রুখে দিয়ে কলেজ ভবনের নির্মান কাজ শুরুর দাবীতে গত এক সপ্তাহ ধরেই আন্দোলন করছে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা । তারা বলছেন, যারা কলেজের মাঠ রক্ষার নামে ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করছে তারা আসলে কলেজের ছাত্র নয়। কলেজের সব শিক্ষার্থী চায় নোতুন ভবন হোক বর্তমান জায়গায়। শিক্ষার্থীরা দাবী করেন, উন্নয়ন বিরোধী মহলকে জেলা প্রশাসন গুরুত্ব দেওয়াতেই আমাদের ভবন নিয়ে এই জটিলতা তৈরি হয়েছে ।
এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি তবে কলেজের ফাÐ যেন ফেরত না যায় সে দিকে নজর রাখা হবে।