|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||
মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এএস আই আবু হানিফ ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রশান্ত কুমার তালুকদার বাদী হয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, দুদক এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভাগীয় কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষক প্রশান্ত কুমার তালুকদার হবিগঞ্জ বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের সহকারী শিক্ষক এবং হবিগঞ্জ পৌরসভার চিরাকান্দি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মৃত যতীন্দ্র মোহন তালুকদারের ছেলে।
গত ২৫শে জানুয়ারি প্রশান্ত এবং তার বন্ধু বিশেষ প্রয়োজনে হবিগঞ্জ গরু বাজারের খাদ্য গুদাম এলাকায় গেলে এএস আই আবু হানিফ ও তার সহকারীকে নিয়ে সিভিল পোশাকে ওই স্থানে যান। এ সময় ভুক্তভোগী প্রশান্ত এবং তার ২ বন্ধুর শরীরে কৌশলে মাদক দিয়ে মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখান তারা এবং মাদক মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন তারা।
এ সময় প্রশান্তের দুই বন্ধু টাকা দিতে না পারায় ভ্রামমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়ে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে পূর্ব শর্ত অনুযায়ী টাকা পাওয়ার আশ্বাসে ঘটনার পরই এএসআই আবু হানিফ এবং তার সহকারী কনেস্টেবল কৌশলে বাঁচিয়ে দেন প্রশান্ত কুমার তালুকদারকে।
তবে এখানেই শেষ নয়, পুরো নাটক ঘটানোর পর আবারো মোবাইলে বার বার ফোন দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করেন তারা, পরে বৃহস্পতিবারে বাধ্য হয়ে এএসআই আবু হানিফের বিকাশে টাকা পাঠান প্রশান্ত, এ টাকায় সন্তুষ্ট হননি আবু হানিফ। তিনি ক্রমান্য়ে টাকার পরিমান বাড়াতে থাকেন।
পরে বাধ্য হয়ে বিষয়টি সবাইকে জানান প্রশান্ত। এবং সর্বশেষ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে অভিযোগ পাঠান তিনি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্হা নেয়া হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লা জানান, বিষয়টি তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এবং তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভাগীয় কর্মকর্তা জানান, অধিদফতরের কোন কর্মকর্তা দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকলে এবং প্রমান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্হা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী প্রশান্ত কুমার তালুকদার জানান, আমাকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে নাটক সাজানো হয়েছে এবং আমার হাত থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তার পরও এ টাকা পেয়ে খুশি নয় তারা, টাকার জন্য আমাকে বার বার ফোন করেছেন এবং আমি নির্দোষ।
এ বিষয়ে মূল নাট্যকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের এএসআই আবু হানিফের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কয়েকজন ব্যক্তি শহরেরে খাদ্য গুদাম এলাকায় মাদক সেবন করেছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সেখানে গিয়ে তাদের হাতে নাতে আটক করি এবং প্রশান্ত কুমার তালুকদার সহ তিনজনকে আটক করে তাদের দেহ তল্লাশি করে মাদক উদ্ধার করি এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমেনা খাতুনের আদালতে হাজির করলে ঘটনার সত্যতা পেয়ে দুইজনকে ১৫ দিনে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
প্রশাস্ত কুমার তালুকদার বিয়াম স্কুলের সহকারী শিক্ষক হওয়ার সুবাদে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়, মাদকসেবী প্রমানিত হওয়ায় চাকরি বাঁচতে আমাদের উল্টো ফাঁসানোর চেষ্টা করছে প্রশান্ত বলে জানান তিনি।