শাল্লার হিন্দুগ্রামের হামলায় জড়িত কাউকে ছাড় দেবে না পুলিশ

মামলার প্রধান আসামী শফিকুল ইসলাম স্বাধীন মেম্বার যুবলীগের কেউ নয় বলে দাবী করেছেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক খায়রুল হুদা চপল।

আরো গ্রেফতার ১১ স্বাধীনকে অস্বীকার যুবলীগের

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ ||

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্র্রাদায়ের গ্রাম ভাংচুর ও লুটপাটের মামলার প্রধান আসামী শফিকুল ইসলাম স্বাধীন কোন দলের তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, হামলায় জড়িত কাউকেই তারা ছাড় দেবে না। অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবেই।

রোববার ২১শে মার্চ দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রত্যয়ের কথা জানান পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

পুলিশ সুপার আরো জানান, গত শনিবার থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত অভিযানে আরো ১১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে দায়ের করা ২ মামলায় এপর্যন্ত মোট ৩৩জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গায় ইসলামী জলসা, সভা ও সমাবেশ বন্ধ রাখার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলেম-ওলামাদেরকে উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন মতবিনিময় করেছেন।

তবে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- সাম্প্রদায়িক হামলার প্রধান আসামী শফিকুল ইসলাম স্বাধীন মেম্বারের বাড়ি জেলার দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের নাচনী গ্রামে। তিনি দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এব্যাপারে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নোয়াগাঁও গ্রামের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বাধীন মেম্বারের বিরোধ ছিল। পুলিশ এসব বিষয় তদন্ত করছে। কে দোষী আর কে নির্দোষ সেটা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয় নিয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত ও অভিযান চলছে।

মামলার প্রধান আসামী শফিকুল ইসলাম স্বাধীন মেম্বার যুবলীগের কেউ নয় বলে দাবী করেছেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক খায়রুল হুদা চপল। শনিবার পৌরশহরের রমিজ বিপনির জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে যুবলীগ নেতারা জানান, ২০০৭ সালের পর থেকে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় যুবলীগের কোন সাংগঠনিক কমিটি নেই। শাল্লার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার মূল ঘটনাকে আড়াল করার জন্য একটি কুচক্রি মহল শফিকুল ইসলাম স্বাধীন মেম্বারকে যুবলীগ নেতা বলে প্রচার করছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র। সে শাল্লা যুবলীগের কোন কমিটিতে নেই সে যুবলীগের কোন সদস্যই নয়।

উল্লেখ, গত ১৭ই মার্চ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালিয়ে ৮৭টি বাড়িঘর ও ৬টি মন্দির ভাংচুর করে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করা হয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে শাল্লার হবিবপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বাদী হয়ে ১টি মামলা ও শাল্লা থানার এক এসআই বাদী হয়ে ১টি মামলা করেন। ২টি মামলাতেই প্রধান আসামী করা হয় শফিকুল ইসলাম স্বাধীন মেম্বারকে। পুলিশের মামলায় ৭০-৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো দেড়হাজার জনকে আসামী করা হয়েছে। হামলার ঘটনার পর থেকে চারদিকে আংতক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।      

সংবাদ সারাদিন