|| অনলাইন প্রতিনিধি, রংপুর ||
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে কৃষকেরা চাষ করেন মরিচের। ফলনও হয়েছে ভাল। কিন্তু করোনা অভিঘাতে পাল্টে গেছে সব হিসাব। বিস্তর খরচ করে ফসল ফলিয়েও মিলছে না দাম। সারাদেশ লকডাউনে চলছে না যানবাহন। আসতে পারছে না পাইকাররা। প্রান্তিক কৃষকরা পড়েছেন বিপদে।
মরিচ বেচাকেনার জন্য খ্যাত রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার হাটগুলো। প্রতি বছর এইসময়টাতে বিভিন্ন জেলা থেকে মরিচের পাইকাররা আসতো এই সব হাটে মরিচ কিনতে। মরিচের হাটে কথা হয় কয়েকজন চাষীর সঙ্গে। তারা বলেন, আজ আমরা হাটে আসছি মরিচ বেচাকেনা হয় কিনা তা দেখার জন্য।
তারা জানান, এবার মরিচের ফলন খুবই ভালো, কিন্তু গেল বছর যেখানে প্রতি মণ শুকনো মরিচ বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা, সেখানে এবারে প্রতি মণের দাম মাত্র ২ হাজার টাকা, আবার কাঁচা মরিচ ২২০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতি মণ। মরিচ বেচতে না পারায় একদিকে ঘরে নেই খাবার। অন্যদিকে ধানের লোকসান কাটিয়ে উঠতে মরিচ চাষ করেও করোনা অভিঘাতে উৎপাদন খরচ তোলাই দায় হয়ে পড়েছে।

বিগত বছরের তুলনায় এবার মরিচ চাষের পরিমাণ বেশি ছিল। এখানকার মরিচ ঢাকা চট্টগ্রাম সিলেট কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। উপজেলার খাপ্রিখাল গ্রামের মরিচ চাষি আসলাম উদ্দিন জানায়, ইরি বোরো ধান বাজারে কম দাম পাওয়ায় সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার বেশি জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে।
এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে জমি তৈরি লাগানো, ফসলে খাবার, পোকা দমনে ওষুধ প্রয়োগ, পরিচর্যা শ্রমিকের মজুরিসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচা হয়ে থাকে। কিন্তু মাত্র ৬ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তোলা সম্ভব হচ্ছে না।



সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ করে ১০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করে দাম কম পাওয়ায় হতাশায় পড়েছেন বেতগাড়ির মরিচ চাষি হামিদুল ইসলাম। আর কাঁচা মরিচ পাইকার অমিত হোসেন জানান, বেতগাড়ি এলাকা থেকে কক্সবাজার, সিলেট, কুমিল্লা, খুলনা, চট্টগ্রাম, ঢাকার কাওরান বাজার, মিরপুর, সাভার ও গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার মন কাঁচা মরিচ ট্রাক যোগে সরবরাহ করা হয়। বাজারে কাঁচা মরিচের অধিক সরবরাহ ও পাইকার কম থাকায় মূল্য কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এবার কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে সরবরাহ বেশি কিন্তু পাইকার বা ক্রেতা কম থাকায় কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমে গেছে।#