শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর ||
জেলার শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসক ও নার্সদের মারধর করেছে স্বজনরা। প্রতিবাদে সোমবার সকালে হাসপাতালের বর্হিবিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে নার্সরা। রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সুত্র জানায়, গাজীপুর মহানগরীর উত্তর সালনা এলাকার আতাবুল্লার স্ত্রী আলেকজান (৪০) শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ২৫শে ফেব্রুয়ারি বিকেলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালের নতুন ভবনের ৭ম তলায় মেডিসিন বিভাগের নারী ওয়ার্ডের ৩৩ নম্বর বিছানায় আলেকজানের চিকিৎসা চলছিল। ২৮শে ফেব্রুয়ারি রাত বারোটার দিকে আলেকজান মারা যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আলেকজানের স্বজনরা। ভাংচুর করে হাসপাতালে।
এসময় দায়িত্বরত নার্স সেলিনা আক্তার ও সুমাইয়া সুলতানা প্রাণভয়ে একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। তখন রোগীর স্বজনরা সিনিয়র স্টাফ নার্স মনোয়ারা বেগমের ওপর হামলা ও তাকে মারধর করে। নার্সদের ওপর হামলার প্রতিবাদে হাসপাতালের বর্হিবিভাগের সামনে সোমবার ১লা মার্চ সকালে নার্সরা একঘন্টা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেন।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নার্সেস এসোসিয়েশনের সভাপতি শামীমা নাসরিন শেলী’র সভাপতিত্বে বিক্ষোভসমাবেশে বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা সিনিয়র স্টাফ নার্স হাবিবুর রহমান ও স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য খান মো. মফিজ উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতারা।
বক্তারা বলেন, এ হামলার বিচার না হলে নার্সরা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন। জরুরী বিভাগের নার্সেস ইনচার্জ হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে রোগী মারা যেতেই পারে। এ জন্য নার্সদের মারধর করা হবে। তা মেনে নেয়া যায়না। আজকে নার্সরা কাজে যোগ দিয়েছে, তবে উপযুক্ত বিচার না হলে আন্দোলনে যাব।
এরইমধ্যে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে জরুরি সভা করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হাফিজ উদ্দিন। এতে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুল কাদের, উপ-পরিচালক ডা. তপন কান্তি সরকার, কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামানসহ চিকিৎসক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নার্সেস কর্মকর্তা প্রতিনিধি ও কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সম্পর্কে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুনজুর হোসাইন বলেন, রোগীর মৃত্যুর পর আমি হাসপাতালে গিয়েছি। মৃত্যুর ঘটনাটি স্বজনরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। লাশ তিনঘন্টা আটকে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসক ও নার্সদের অনুরোধ করে লাশ নিয়ে এসেছি এবং দাফন করেছি। তবে নার্সদের মারধর করবার বিষয়টি দুঃখজনক।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হাফিজ উদ্দিন বলেন, রোগীদের কথা চিন্তা করে নার্সদের অবস্থান কর্মসূচী ও কর্মবিরতিতে না যাওয়ার অনুরোধ করেছি। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জিএমপি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। জিএমপি সদর থানা বলছে, এবিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।