|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ ||
দেশের করোনা সংক্রমণরোধে সাত দিনের লকডাউনের প্রথমদিন ছিল সোমবার। অন্যান্য দিনের মতো চিরচেনা অবস্থা না দেখা গেলেও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে বাস ছাড়া সবই চলাচল করেছে। আর সেই সঙ্গে সড়কে অনেক মানুষও দেখা গেছে। কেউ দৈনন্দিন কাজে বের হয়েছেন, আবার কেউ জীবন-জীবিকার তাগিদে।
সিরাজগঞ্জ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। তাছাড়া লকডাউনের মধ্যেও খাবারসহ নিত্যপণ্যের দোকান খোলা ছিল এবং কাঁচাবাজারেও মানুষের সমাগম দেখা গেছে।
ভোর থেকে সিরাজগঞ্জসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে লকডাউন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হতে পারবে না। সেইসঙ্গে বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। এছাড়া শপিং মল বন্ধ থাকলেও কাঁচাবাজার খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর রেস্তোরাঁ গুলোতে বসে খাবার গ্রহণের ব্যবস্থা না থাকার শর্তে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সকাল থেকে সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় বাস নেই, তবে উল্লেখযোগ্য হারে চলছে প্রাইভেট কার, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা এবং মোটরসাইকেল। তবে এসব পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বাস্তব চিত্র দেখা যায়নি। অর্থাৎ সবাই একই সিটে পাশাপাশি বসেই যাচ্ছেন।
গণপরিবহন না থাকায় আবার অন্য পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া গুনছেন অনেকেই। তাদের মতে, জরুরি ভাবে কোথায় যাওয়ার থাকলে কিছু করার থাকে না। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
তেমনি আমাদের কথা হয় এক শিক্ষার্থী রাজিব আহমেদের সাথে তিনি বলেন, আমার বাড়ি শাহজাদপুর, সাতদিনের এই লকডাউনে ম্যাসে থেকে বাড়িতে যাচ্ছি। বাস চলাচল বন্ধ, কোনও উপায় না পেয়ে বিকল্প সড়কে সিএনজিতে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি আর বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ চালকেরা। তারা একটি সিএনজিতে ৫ জন করে যাত্রী নিয়ে চলছে।
অন্যদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লকডাউনের মধ্যে কেউ কেউ খোলা রেখেছেন খাবারের দোকান। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বসার ব্যবস্থা রাখেননি তারা। ক্রেতারা পার্সেল নিয়ে চলে যাচ্ছেন। শহরের তৃপ্তি হোটেলের ম্যানেজার মো. ওয়াজেদ জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা খাবার বিক্রি করছেন। আপাতত কোনও ফ্লোরে বসার ব্যবস্থা নেই।
এদিকে অনেক জায়গায় রাস্তার পাশেই ভ্রাম্যমাণ বাজার বসেছে। সবজি থেকে শুরু করে মাছও বিক্রি হচ্ছে এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে। এসব বাজারে লোকসমাগম থাকলেও সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যবস্থা চোখে পড়েনি।
মুজিব সড়কে এরকম একটি ভ্রাম্যমাণ বাজারের মাছ বিক্রেতা আলাউদ্দিন খান বলেন, আমি অনেকদিন ধরেই এই ভাবে মাছ বিক্রয় করি। বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বসে। এতে জায়গার কম তাই একটু কাছাকাছি বসতে হয়। আজও সেই ভাবেই বিক্রয় করছি।
এসময় কয়েকজন ক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও বিক্রেতাদের অনেকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে লকডাউনের কারণে শপিংমল সব বন্ধ রয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, আজকে লকডাউনের প্রথম দিন। আমাদের জেলা প্রশাসন থেকে একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। আমাদের পুলিশ মোবাইল টিমের সাথে আছে। এবং দোকানদেরকে উৎসাহ দিচ্ছে তারা যেন দোকান বন্ধ করে সরকারের আদেশ পালন করে।