মোংলায় মেগা প্রকল্পের জমির ক্ষতিপূরণ দিতে উদ্যোগ নেই প্রশাসনে

ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছেন এমন ৭শ’র বেশী মানুষ ঘুরছেন বাগেরহাটের ডিসি অফিসের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায়। আবেদনকারীদের অভিযোগ, এসব দাবি মেটাতে তেমন গা করছেন না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ||

মোংলা বন্দর ঘিরে বাগেরহাট জেলায় তিনটি মেগা প্রকল্পের জন্য গত ১০ বছর মোট জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ২৬শ’ ৩৮ একর। এরমধ্যে রয়েছে খুলনা-মোংলা রেল লাইন, খানজাহান আলী বিমান বন্দর ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এসব জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ রাষ্ট্র এপর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ৩৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছেন এমন ৭শ’র বেশী মানুষ ঘুরছেন বাগেরহাটের ডিসি অফিসের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায়। আবেদনকারীদের অভিযোগ, এসব দাবি মেটাতে তেমন গা করছেন না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

বাগেরহাট ডিসি অফিসের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার মাধ্যমে জানা যায়, খুলনা-মোংলা রেললাইনের জন্য বাগেরহাট জেলায় জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ২৭৫ একর। রেললাইনের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৮৬ কাটি ৭৬ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এখনো ক্ষতিপূরণের ৪০০ আবেদন পড়ে আছে ডিসি অফিসের এলএও শাখায়। বিমানবন্দরের জন্য দ্বিতীয় পর্যায় জমি অধিগ্রহণ করা হয় ৫২৯ একর। ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে ১২৫ কাটি ৭৪ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবারের আবেদন রয়েছে এলএও শাখায়। রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেদ্র নির্মানের জন্য ১৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।  এ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে মাত্র ৫৭ কাটি টাকা।

খানজাহান আলী বিমান বন্দর প্রকল্প প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাট জেলার নেতা এম এ সবুর রানা বলেন, অধিগ্রহণ করা এলাকার মধ্য দাউদখালী, জাখালী এবং ভালা নদী পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে খালগুলো খনন করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। হাইকোর্টের রায় অনুয়ায়ী নদী একটি জীবন সত্তা। বিমান বন্দর বাস্তবায়িত হলে নদী তিনটির অস্তিত্ব থাকবে না।

বিমান বন্দর প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, তাদের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে তা বর্তমান বাজারমূল্যে যথাযথ নয়। ক্ষতিপূরণ দাবিতে বহু আবেদন পড়ে আছে বাগরহাট ডিসি অফিসের এল এ শাখায়।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত হেমায়েত হাসান বলেন, ৫০টির মতো আবেদন দিয়েছি ডিসি অফিসে। যাতে স্থানীয় এমপি এবং খুলনা সিটি মেয়রের সুপারিশ রয়েছে। এখনো কোন ক্ষতিপূরণ পাইনি এবং আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।

এবিষয় জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ পরে কথা হবে বলে জানান এই প্রতিবেদককে। অন্যদিকে বাগেরহাট পরিবেশ অধিদফতর থেকে জানানো হয়, বিমান বন্দর এবং রেললাইন নির্মানের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্রও নেয়া হয়নি এখনো।

সংবাদ সারাদিন