মাদ্রাসা শিক্ষকের লাঠিপিটুনি আর লাত্থিতে ছাত্র হাসপাতালে

রোববার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের নলবুনিয়া হাজি বাড়ি কওমী মাদরাসার ছাত্র তামিমের অপরাধ সে সহপাঠীর সঙ্গে দুষ্টুমি করেছিল। আর এ কারণেই শিক্ষক মুফতি আবু দাউদ লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায়।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ||

বাগেরহাটের শরণখোলায় কওমী মাদরাসা শিক্ষকের লাঠিপিটুনি আর লাত্থিতে মারাত্মক আহত ছাত্র তামিম এখন হাসপাতালে। চৌদ্দ বছরের আহত তামিমকে ভর্তি করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ঘটনায় রোববার রাতে শরণখোলা থানায় মামলা করা হয়েছে।

রোববার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের নলবুনিয়া হাজি বাড়ি কওমী মাদরাসার ছাত্র তামিমের অপরাধ সে সহপাঠীর সঙ্গে দুষ্টুমি করেছিল। আর এ কারণেই শিক্ষক মুফতি আবু দাউদ লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায়।  

শরণখোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্র তামিম জানায়, রোববার সকালে সহপাঠী রাব্বিকে ভেংচি দিলে সে দাউদ হুজুরের কাছে অভিযোগ জানায়। এর পর হুজুর একটি গাবের লাঠি নিয়ে এসে তাকে বেদম পেটাতে শুরু করেন। পেটাতে পেটাতে এক পর্যায় লাঠি ভেঙে যায়। কয়েকবার পা ধরে ক্ষমা চাইলেও হুজুর মারতেই থাকেন। লাথি মেরে সরিয়ে দেন তামিমকে। তামিম তার হাত-পা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্নগুলো দেখায়। প্রতিটি আঘাতে রক্ত জমাট বেধে ফোঁসকা পড়েছে। লাঠির আঘাতে তার বাম হাতের কনু আঙ্গুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত ছাত্র মধ্য নলবুনিয়া গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক শামিম হাওলাদারের ছেলে।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফুল ইসলাম রাকিব বলেন, ছেলেটির শরীরে ১৩টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে, বাম হাতের কনু আঙ্গুল ভেঙেছে কি না তা এক্স-রে করার পরে জানা যাবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক মুফতি আবু দাউদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, রাব্বি নামের ওই ছেলেটির হাত ভাঙা। তামিম তাকে প্রতিবন্ধী বলে টিটকারী মারে। এই অভিযোগ করার পর আমার খুব খারাপ লাগে। তখন আমার মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় আমি কয়েকটি পিটান দিয়েছি।

মাদরাসার সুপার হাফেজ মো. আল-আমীন বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। সকালে ঘটনা শুনে মাদরাসায় জানতে পারলাম, দুই ছাত্র (তামিম-রাব্বি) মারামারি করেছে। এতে দাউদ হুজুর তামিমকে শাসন করতে গিয়ে একটু অতিরঞ্জিত করে ফেলেছে। এভাবে শাসন করায় আমি হুজুরকে ধমক দিয়েছি। আমরা তামিমের অভিভাবকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছি।

শরণখোলা থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, মাদ্রাসা ছাত্রকে পেটানোর ঘটনায় ছাত্রের পিতা শামীম হাওলাদার বাদী হয়ে রোববার রাতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশী তদন্ত চলছে।

সংবাদ সারাদিন