|| সারাবেলা প্রতিনিধি, মেহেরপুর ||
ইটভাটায় মাটির যোগান দিতে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। শুধু টপ সয়েলই নয়, রীতিমতো জলাশয়ে পরিণত করা হচ্ছে মাঠকে মাঠ জমি। এসব মাটিব্যবসায়ীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করছে না কেউ।
এমন নির্বিচারে মাটি কাটায় শুধু যে কৃষিজমি জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে তাই নয়, এসব মাটি পরিবহনের জন্য পাকা ও কাঁচা সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটি বোঝাই যন্ত্রদানব ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়ে এবরোথেবড়ো হচ্ছে রাস্তা। সড়কগুলো নষ্ট হওয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে সর্বস্তরের জনসাধারনের।।
প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন মানুষ ও প্রকৃতিবিরুদ্ধ অপতৎপরতা বন্ধে জোরালো কোন পদক্ষেপ নেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, সবজি চাষের জন্য খ্যাত মেহেরপুর জেলা। শুধু সবজিই নয়, অন্য ফসল উৎপাদনেও এগিয়ে এই জেলা। বছরের প্রায় সব সময় পাওয়া যায় সবজি। জেলার অর্থনীতি সমৃদ্ধ করছে সবজি চাষ। অথচ জেলা জুড়ে চলছে এমন অবৈধ মাটি কাটার কারণে কমে আসছে আবাদি জমি। বিশেষ করে তিন ফসলি জমিতে পুকুরের মতো গর্ত করে মাটি নিয়ে যাওয়ায় খাদ্য ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রত্যেক দিন ৮০ থেকে ১০০ গাড়ি মাটি ট্রাক্টর দিয়ে নেওয়া হচ্ছে আশেপাশের বিভিন্ন ইটভাটায়। মাটি কাটার কারণে আমাদের ফসলি জমিগুলো বিনষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া মাটি বহনের সময় যে পরিমান ধুলো উড়ছে তাতে করে রাস্তাতে চলাচল করা খুবই মুশকিল হয়ে পড়ছে। রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ধুলোতে যেমন নষ্ট হচ্ছে আশেপাশের পরিবেশ। ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। তারা আমাদের কোন কথায় কর্ণপাত না করে দিনরাত বিরতিহীন মাটি খনন করেই চলেছে। এভাবে মাটি কাটা চলতে থাকলে আমাদের জমিসহ আশেপাশের জমি ভেঙ্গে যাবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভীপুর গ্রামের জনৈক কাউসার গোভীপুর-হরিরামপুর সড়কের পাশে জমির মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করছেন।বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রায় দশ বিঘা জমির মাটি কেটে মোটা টাকার বিনিময়ে ইটভাটায় বিক্রি করছেন জমির মালিক বাড়িবাকা গ্রামের বাবু হাজী।এছাড়াও বাড়িবাকা গ্রামে জনৈক বিপ্লব একই কায়দায় মাটি বিক্রি করছেন ইটভাটায়।
এলাকায় যেন পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষকরা না বুঝে যেমন হারাচ্ছেন তাদের উর্বর ফসলি জমি, অন্যদিকে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন এক শ্রেণির প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ী।