ভোলায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা

|| অনলাইন প্রতিনিধি, সদর (ভোলা) ||

ঘুর্ণিঝড় আমপানের আঘাতে বিপর্যস্ত ভোলার জনজীবন। তছনছ হয়ে গেছে ঘরবাড়ি। ভেঙ্গে গেছে বেড়িবাধ। নষ্ট হয়ে গেছে ফসল। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ক্ষতির আর্থিক পরিমান কয়েক কোটি টাকা। দুর্ভোগ চরমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর।

সবথেকে বেশী ক্ষতিতে পড়েছে জেলার সর্ব দক্ষিনের উপজেলা চরফ্যাসনের সাগর মোহনার ঢাল চর ইউনিয়নের মানুষ। ঝড়ের সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে নিজেরা প্রাণে বাঁচলেও বাড়িঘরের অবশিষ্ট কিছুই নেই। বেশীর ভাগ মানুষ এখন রাত কাটাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। রাষ্ট্রের দেওয়া সহয়াতা যা কিছু এসেছে তাও সবার ভাগ্যে জোটেনি।

এদিকে শেষ সম্বল যা আছে তা দিয়ে বাড়িঘর ঠিকঠাক করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ঢাল চরের বিধ্বস্থ পরিবারগুলো । এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার জানান, দুর্গম এই চরাঞ্চলে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোন রাষ্ট্রিয় সহায়তা পৌঁছেনি।

শুক্রবার বিকেলে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ১৫০ প্যাকেট খাদ্যসহায়তা এসেছে। তবে তাতে কি আছে তা এখনো দেখার সুযোগ হয়নি তাদের।

তবে প্রশাসনের দাবি, তাদের পক্ষ থেকে জেলার ক্ষতিতে পড়া মানুষদের জন্য এ পর্যন্ত ৩ শত মেট্রিক টন চাল, ৯ লক্ষ টাকা, ১৭ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এস এম মঈন উদ্দিনের উপস্থিতিতে চরফ্যাশনের চর মানিকায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০ পরিবারকে শুক্রবার সকালে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়। । খাদ্যসহায়তার মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, খাবার স্যালাইন, ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট।

ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রসঙ্গে জেলা ত্রাণ কর্মকতা পিয়াস চন্দ্র দাস জানান, আমপানে ভোলায় ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৮ জন মানুষ ক্ষতিতে পড়েছে। এছাড়া জেলায় ৩৩২টি ঘর সম্পূর্ন বিধ্বস্ত ও ১৬০০ ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ৩৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার বেড়ি বাধ ও রাস্তার ভেঙ্গে বা ধসে গেছে। ৩ হাজার ১৭৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। গবাদি পশু মারা গেছে ৬৫৭টি।

এছাড়া আড়াই হাজার মাছের খামারের মাছ ভেসে গেছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকতা আজহারুল ইসলাম বলেন, মৎস্যখাতে ঘুর্ণিঝড়ে প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন