ভালুকায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

ভালুকা(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি আমতলি এলাকায় অবস্থিত কটন গ্রুপের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ে প্রতিবাদ ও বেতনের দাবীতে বৃহস্পতিবার (৪জুন) বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা মিল গেইটে বিক্ষোভ করে এক ঘন্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহা-সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।      


শ্রমিকরা জানায়,কটন গ্রুপের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই করোনা সমস্যা শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে জেভিপি মোস্তাফিজের নেতৃত্বে ও মিলের ভিতরে ভাড়াটিয়া গোন্ডা বাহিনী বসিয়ে প্রতিদিনই ১০/১২জন করে শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে ছাঁটাই করছে। শ্রমিকরা মিলে কাজ করতে গেলেই মালিক পক্ষের কিছু ভাড়াটিয়া গোন্ডা বাহিনী ও মিলের কর্মকর্তারা শ্রমিকদের কাছ থেকে  জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ও পরিচয়পত্র রেখে মিল থেকে বের করে দেয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রম বিধি না মেনে তাদেরকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার পায়তারা করছে। দীর্ঘ দিন যাবত ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা ঘটনার দিন একত্রিত হয়ে মে মাসের বকেয়া বেতন ও চাকরি পূর্ণঃবহালের দাবীতে মিল গেইটের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে। 


বিক্ষোভে কোনো ফল না হওয়ায় শ্রমিকরা ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শ্রমিকরা মহা-সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় রাস্তার দুই পাশে শতশত গাড়ি দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে থানা ও শিল্প পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদেরকে মহা সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ মালিক পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলে বকেয়া বেতন ও চাকরিতে পূর্ণঃবহাল করার আশ্বাসে দুপুর ২টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 
আন্দোলনরত শ্রমিকরা আরো জানান, কোন কারণ ছাড়াই করোনা মহামারির সময় মিল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ছাঁটাই শুরু করে। প্রতিবাদ করায় মালিক পক্ষের স্থানীয় গোন্ডা বাহিনীর লোকজনের কাছে অনেক শ্রমিক নাজেহালও হয়েছে। তাঁদের ভয়ে শ্রমিকরা মুখ খুলতে সাহস পায় না।


কটন গ্রুপের অ্যাডমিন ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, তাদেরকে ছাঁটাই করা হয়নি। কাজ কম থাকায় কিছু শ্রমিক বাহিরে আছে।  কোন বকেয়া বেতন নেই। গত মে মাসের বেতন ৭ তারিখে পরিশোধ করা হবে। আমাদের কোনো ভাড়াটিয়া গোন্ডা বাহিনী দিয়ে শ্রমিকদেরকে সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষরও রাখা হয়নি।   
ময়মনসিংহ শিল্প পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান জানান, কটন গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ সকালে কিছু শ্রমিকদেরকে কাজে যোগ দিতে না দেয়ায় শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে দেয়।
ভালুকা মডেল থানার ওসি তদন্ত খুরশেদ আলম জানান, শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও চাকুরী পূর্ণবহালের আশ্বস্থ্য করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সংবাদ সারাবেলা/ সামিউল ইসলাম/নাআ/সেখা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন