ভালুকায় নেকব্লাস্টে চিটা হচ্ছে ধান সমূহ ক্ষতিতে কৃষক

|| উপজেলা প্রতিনিধি, ভালুকা (ময়মনসিংহ) ||

একেতো করোনার দুর্যোাগ, তার ওপরে প্রায় পাকাধানের পড়েছে নেকব্লাস্টের কুনজর। নেকব্লাস্টে ধানগাছ শুকিয়ে পুড়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে ধানের ছড়া। কিটনাশক ব্যবহারেও কিনারা করতে পারছেন না কৃষক। যখন কিনা পাকা ধান ঘরে তুলবেন ঠিক এসময়ে এমন অবস্থা যারপর নাই ক্ষতিতে পড়েছে তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এবার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৮হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় কয়েকটি ইউনিয়নে নেক ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এ রোগে ধানের শীষ আস্তে আস্তে সাদা হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আঙ্গারগাড়া গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান জানান, তার ৪ একর বোরো ধানের প্রায় ৫০শতাংশই নেক ব্লাস্টে আক্রান্ত। ধানের ছড়া শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। বাকীগুলোও আক্রান্তের মুখে। স্থানীয় বাজার থেকে আনা কিটনাশকেও কাজ হচ্ছে না। শুধু আতাউরই নন, একই গ্রামের কৃষক আফতাব উদ্দিনের ২০শতাংশ, শাহ আলমের ৪০শতাংশ, মনির হোসেনের ৩০শতাংশ জমিতে নেকব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে মনিরের ৩০শতাংশ ক্ষেতের ধানই সবেচয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এক মুঠ ধানও সে ঘরে নিতে পারবে না।

এমন পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগের কোন কাউকেই হাতের কাছে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করলেন আতাউরসহ অন্য সবার। আতাউর বললেন, উপায় না পেযে তিনি তার ক্ষেতের ছবি দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেন।

একই ইউনিয়নের ডালুয়া গ্রামের কৃষক আশ্রাব উদ্দিনের ১০ কাঠা, আবদুর রহমানের ১২ কাঠাসহ এমন অনেক কৃষকের ক্ষেতে এই রোগ দেখা দিয়েছে। মেদুয়ারী ইউনিয়নের অনেক কৃষকের ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। পানিভান্ডা গ্রামের কৃষক সুলতান আহম্মেদ জানান, তারও প্রায় ১০ কাঠা জমির ধান ব্লাস্ট রোগে শেষ হয়ে গেছে। অন্য জমিগুলো নিয়ে চিন্তার শেষ নেই তার।

কৃষকদের অভিযোগ ১০ থেকে ১২দিন ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকলেও কৃষি বিভাগের লোকজনের কোন দেখা মেলেনি। আঙ্গারগাড়ার কৃষক আতাউর রহমান কামাল জানান, তিনি মঙ্গলবার ব্লাস্ট রোগের ছবিসহ ফেসবুকে পোষ্ট দিলে বুধবার উপ সহকারী ব্লক সুপারভাইজার মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ ক্ষেত দেখতে আসেন। ব্লক সুপারভাইজার জানান, তিনি অন্য একটি ব্লকে কাজ করেন। আঙ্গারপাড়াতে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে রয়েছেন। ২টা ব্লক চালানোয় হিমশিম অবস্থা তার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার বলেন, ‘আমরা কৃষকদের ব্রি ২৮ ধান চাষ করতে নিরুৎসাহিত করি। এই ধানে নেকব্লাস্ট রোগটা বেশী হয়। আমার ৩৪ জন ব্লক সুপারভাইজার থাকার কথা। কিন্তু আছে ২২জন। ১২টা ব্লক ফাঁকা । একজন ব্লক সুপারভাইজরকে ২টি ব্লক দেখতে হচ্ছে। তাই এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে। পুরো ডাকাতিয়া ইউনিয়নে মাত্র ২জন ব্লক সুপারভাইজার দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন