|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বরিশাল ||
মোটর সাইকেলের চাবি দিয়ে ভাইয়ের দু’চোখ তুলে নেওয়ার বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করলেন বোন। সোমবার সকাল ১১টায় আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বোন মোসাম্মৎ মুক্তা আক্তার। লিখিত বক্তব্যে মুক্তা আক্তার জানান, গত ৪ঠা ডিসেম্বর নগরীর হাটখোলা কসাইখানা এলাকার বিশ্বাসের হোটেলের সামনে তার ভাই মো. সোহাগ পূর্ব শত্রুতার জেরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। হামলাকারীরা মোটর সাইকেলের চাবি দিয়ে সোহাগের দুটি চোখ তুলে ফেলে। হাটখোলা হকার্স মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মোবারক সিকদারের ছেলেরা তার ভাইয়ের চোখ তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মুক্তা বলেন, মোবারক সিকদার ও তার সন্তানদের সাথে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। হাটখোলা হকার্স মার্কেটের পাশে চর বদনা মৌজায় ভূমিহীন হিসেবে তাদের প্রাপ্ত ৩ শতাংশ খাস জমি নিয়ে এই বিরোধ চলছে। যা তারা ৩০ বছর থেকে ভোগ দখল করে আসছিলেন। ৭ বছর আগে ওই জমি নিজেদের দাবি করে মোবারক সিকদার।
আদালতে মামলা হয় এবং মোবারক সিকদার রায় পান। জালিয়াতির মাধমে এই রায় তিনি নিজের পক্ষে নেন বলে অভিযোগ করেন মুক্তা। এর পরেও আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তারা জমি ছেড়ে দেন। কিন্তু তারপরও মোবারক এবং তার ছেলেরা মুক্তাদের পিছু ছাড়েনি।
ঘটনার পরম্পরায় ৭ বছর পর গেলো ৪ঠা ডিসেম্বর সকালে ভাই সোহাগের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় মোবারক এর তিন ছেলে। বড় ভাই নাজমুলের নির্দেশে অন্য তিন ভাই আল আমিন, সাইফুল এবং রাব্বি কসাইখানা এলাকায় সোহাগের ওপর হামলা চালায়। এসময় আল আমিন তার মোটর সাইকেলের চাবি দিয়ে ভাই সোহাগের দুটি চোখ নষ্ট করে দেয়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে স্থানিয়দের চাপে পুলিশ আল আমিন ও সাইফুলকে গ্রেফতার করে। সোহাগকে উদ্ধার করে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, হামলার কারনে চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছে সোহাগ। এর পরে এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে কসাইখানা এলাকায় মানবন্ধন করে সাধারন এলাকাবাসী।
সিকদার ও তার চার ছেলের বিরুদ্ধে ঘটনার দিন রাতেই মামলা দায়ের করা হয়। মামল দায়েরের পর এত সময় অতিবাহিত হলেও অপর দুই আসামী নাজমুল ও রাব্বিকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে ঘটনায় আটক অপর দুই ভাই ও জামিনে বের হয়ে এসেছে এবং পূনরায় হামলাসহ প্রাননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে নিয়ে তারা এমন বেপরোয়া কর্মকান্ড করে যাচ্ছে বলে জানান মুক্তা। থানা পুলিশকেও তারা প্রভাবিত করবে বলেও প্রচার চালাচ্ছে। তাই অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে এমন নির্মম ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে হামলার শিকার যুবক সোহাগ খান বলেন, আমার স্ত্রী অন্তসত্ত্বা। আর কয়েকদিন পর আমি প্রথম সন্তানের বাবা হতে যাচ্ছি। কিন্তু সন্তানের মুখ দেখার উপায় কেড়ে নিয়েছে তারা। যারা আমার দৃষ্টি শক্তিকেড়ে নিয়েছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, সোহাগ খান এর মা মাসুদা বেগম, অন্তসত্ত্বা স্ত্রী ইয়াসমীন, শ্বশুর বাবুল খান, বড় ভাই ও মামলার বাদী মোঃ মাসুম খান।