|| এস. এম শাহাদৎ হোসাইন, গাইবান্ধা থেকে ||
এক সময়ের ব্যস্ততম রেলস্টেশন ভরতখালীতে ট্রেন আসে না গেল ২০ বছর ধরে। সেই ব্রিটিশ সময় থেকেই বোনারপাড়া জংশন ও তিস্তামুখ ঘাটের মাঝখানের মানুষদের স্থানান্তর করতো এই স্টেশন। কিন্তু তিস্তামুখ জাহাজঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভরতখালী স্টেশন। রেল না আসলে কি হবে মানুষগুলোতো রয়ে গেছে। সহজ সস্তা এই বাহন না থাকায় অন্য কোথাও আসা-যাওয়া আর মালামাল বহন হয়ে পড়েছে বেশ দুর্ভোগের।
বৃটিশ আমল থেকে ভরতখালি রেলওয়ে স্টেশনটি ছিল এতদঞ্চলের একটি ব্যস্ততম রেলস্টেশন। স্টেশন ছিল তিস্তামুখঘাট রেলওয়ে ফেরীঘাটের পরের গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন। ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট বন্ধ হওয়ায় এ রেলওয়ে স্টেশনটি একপর্যায়ে বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এতে করে কাজ হারিয়েছে স্টেশননির্ভর বহুমানুষ। অন্যদিকে বেহাত হয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের প্রায় কোটি টাকার সম্পদ। ক্ষতিতে পড়ছে বোনারপাড়া জংশন থেকে ভরতখালী হয়ে সাবেক তিস্তামুখঘাট পর্যন্ত বসানো রেললাইন। চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান রেলওয়ের লোহার পাত।
ঊনিশ শতকের প্রথমার্ধে তিস্তামুখ ঘাটে রেলওয়ে মেরিন বিভাগ প্রতিষ্ঠা হয়। রেলের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে পরিচালিত হতে থাকে যমুনা নদীর উপর দিয়ে রেলযাত্রী ও পণ্যবাহী ওয়াগন পারাপার। তৎকালিন তিস্তামুখঘাট ও বাহাদুরাবাদ ঘাটের মধ্যে যাত্রী পারাপার ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে মেরিন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
কিন্তু নব্বই দশকের মাঝামাঝি যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের নাব্য কমে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় তিস্তামুখঘাট। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ্রই ঘাট স্থানান্তর করা হয় বালাসীতে। এর পরপরই নির্মিত হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। তখন থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এ রুট।
তিস্তামুখ ফেরিঘাট বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় ভরতখালী রেল স্টেশনটিও। সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করে যাত্রী পারাপার ব্যবস্থার চুড়ান্ত ইতি টানা হলে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারীর লোকজন যমুনার পূর্বপাড়ের জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুরের বিশাল জনগোষ্ঠী রেল যোগাযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ভরতখালী স্টেশন চালু করার দাবি উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে।