|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ||
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে কমপক্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই হেফাজতের কর্মী বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা। শনিবার ২৭শে মার্চ বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর এবং সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় আলাদা সংঘর্ষে গুলিতে এদের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষ এখনও চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রানাউল ইসলাম ৫জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও আরও ৩০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। নিহতরা হলেন নন্দনপুর হারিয়অ গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে ওয়ার্কশপের দোকানী জুরু আলম (৩৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবিড় মিয়ার ছেলে শ্রমিক বাদল মিয়া (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারিউড়া মৈন্দ গ্রামের জুরু আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২) এবং বুধলের আলী আহমদের ছেলে প্লাম্বার শ্রমিক কাউসার (২৫)
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুক্রবারের সহিংসতা, মোদিবিরোধী অবস্থান, হাটহাজারী ও বায়তুল মোকাররমের সামনে হামলার প্রতিবাদে হেফাজত শনিবার বিকালে কর্মসূচি দেয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন্দনপুরে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মহাসড়কে অবস্থান করে।
এরই মধ্যে বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টিএ রোড দিয়ে আওয়ামীলীগের একটি মিছিল জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এলাকা অতিক্রম করার সময় পেছন দিক থেকে মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রকে ধাওয়া করে। এসময় ছাত্ররাও পাল্টা ধাওয়া দেয়। তখন অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কিছুক্ষণ পর কান্দিপাড়া মসজিদ থেকে মাদ্রাসাকে রক্ষার জন্য মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেয়া হলে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে পড়ে। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা পিছু হটে। ক্ষুব্ধ লোকজন প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাদ্রাসা এলাকায় থেমে থেমে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ চলছিল।
সরকারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সদর উপজেলার নন্দরপুরেও গ্রামবাসী ও হেফাজতের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কর্মসূচির নামে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সেখানেও আত্মরক্ষায় গুলি ছোড়ে পুলিশ। সেখানেও কয়েকজন আহত হন।
অন্যদিকে সরাইল উপজেলায় স্থানীয়দের বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে। এতে ক্যাম্পে থাকা ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের নাম জানা যায়নি। তাঁদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ অন্তত ৪০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ১৫ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরাইল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আলী আহমেদের ছেলে কাউসার মিয়া, সাইদ মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (৩৫), আব্দুল সাত্তারের ছেলে বাছির মিয়া (২৮), আবদুল হোসেনের ছেলে ছাদের মিয়া (৩৫) হাসপাতালে আনা হয়।