বাংলাদেশের স্বপ্নসঙ্গী হতে চায় চীন

‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’, বঙ্গবন্ধুর এই নীতিই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলকথা আজও। বঙ্গবন্ধু চীনের দীর্ঘদিনের ও প্রকৃত বন্ধু।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে চীনের প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছাবার্তা

|| সারাবেলা প্রতিবেদন ||

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে যে স্বপ্নের পথে বাংলাদেশ হাঁটছে, তার বাস্তবায়নে সঙ্গী হওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনসময়ে এক শুভেচ্ছা ভিডিও বার্তায় নিজের এমন আকাঙ্ক্ষার কথা জানান চীনা প্রেসিডেন্ট।  এক ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে এ আকাঙ্ক্ষার কথা জানান শি চিন পিং।

বুধবার ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং ছাড়াও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ অবশ্য সরাসরি যোগ দেন অনুষ্ঠানে।

বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকারের কাজ করে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শি চিন পিং বলেন, এ সময়ে দুই দেশই উন্নয়নের মাধ্যমে একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চীনের নবতর পর্যায়ে উত্তরণের যে স্বপ্ন, তার সঙ্গে মেলবন্ধন হতে পারে সোনার বাংলার স্বপ্নের।

মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন এবং দারিদ্র্য কমাতে বাংলাদেশ যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে, তার সাফল্যে উচ্ছ্বাস জানান চীনের প্রেসিডেন্ট। কোভিড মহামারিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, তা চীন কখনো ভুলবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে চীনের সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন চিন পিং। বাংলাদেশের কমবেশি ৯৭ শতাংশ পণ্য এখন চীনে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাচ্ছে বলেও জানান তিনি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে নিজের সফরের কথা উল্লেখ করে সি চিন পিং বলেন, চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থায়ী হবে বলে তিনি আশাবাদী।

এই আয়োজনেই চীনের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ ভাস্কর্য উপহার দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে।

বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে সি চিন পিং বলেন, একজন মানুষ তাঁর সারা জীবন দেশ ও মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তাঁর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ১৬ কোটি মানুষের এক হয়ে থাকার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে। আজকের দিনে বাংলাদেশের মানুষ শ্রদ্ধাভরে তাঁকে স্মরণ করছে।

সি চিন পিং বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’, বঙ্গবন্ধুর এই নীতিই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলকথা আজও। বঙ্গবন্ধু চীনের দীর্ঘদিনের ও প্রকৃত বন্ধু। ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে তিনি চীন সফর করেছিলেন। চীনের নেতা মাও সে তুং এবং অন্যান্য নেতার সঙ্গে তিনি মৈত্রীর সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। একইসঙ্গে চীন–বাংলাদেশ সম্পর্কের পেছনে সব নেতা ভূমিকা রেখেছিলেন, তাঁদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন শি চিন পিং।

সংবাদ সারাদিন