|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গৌরনদী (বরিশাল) ||
“ভাইয়া আমায় বাঁচাও, ওরা আমাকে মেরে কি যেন আমার মুখে ঢেলে দিচ্ছে। মৃত্যুর আগে মেঝো ভাই নাঈমুর রহমানের কাছে এমনটাই আর্তনাদ জানিয়েছিলেন নিহত কলেজছাত্রী ফারজানা।
নিহত ফারজানা বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিরা ইউনিয়নের খানাবাড়ি গ্রামের আদম আলী বেপারীর কন্যা।
নিহত ফারজানার স্বজনরা জানান, গত দুই বছর পূর্বে একই উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বেজহার গ্রামের মোস্তফা শিকদারের ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফারজানার। পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ফারজানার সাথে শারিরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় প্রেমিক রাব্বি। তাই গত কয়েকমাস পূর্বে প্রেমিক রাব্বির বাড়িতে বিয়ের দাবীতে অবস্থান করে ফারজানা। সে সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর মধ্যস্থতায় তাদের (ফারজানা-রাব্বির) সামাজিকভাবে বিয়ে দেয়ার কথাবার্তা পাকা করেন দুই পরিবার।
নিহত ফারজানার মা জানান, বুধবার (১৯ মে) সকালে রাব্বির ফোন পেয়ে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় ফারজানা। দুপুরে রাব্বির পিতার মাধ্যমে তারা (ফারজানার স্বজনরা) জানতে পারেন রাব্বির পশ্চিম বেজহার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে ফারজানা।
নিহত ফারজানার মামা মোঃ কালাম খান জানান, উভয় পক্ষের কথাবার্তার পরে ছেলে ও মেয়ে দুজনই একে অপরের বাসায় যাওয়া আসা করতো। সেই সুবাধে গত বুধবার ফারজানা ওই বাড়িতে গেলে খুব মারধর করে রাব্বির পরিবার। মারার এক পর্যায়ে ফারজানার অবস্থার অবনতি দেখলে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয় রাব্বির পরিবারের লোকজন।
কালাম খান আরও জানান, রাব্বির পরিবারের সদস্যরা তাকে (ফারজানাকে) গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে রাত তিনটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার (ফারজানা) মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর ফারজানার ঘাড় মটকানো ছিল। তাছাড়া ফারজানার মুখের চোয়াল দুটিতেও আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে বলে জানান তার মামা কালাম খান।
ঘটনার পরে রাব্বির বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায় নি, এবং মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর ফোনে একাধিকবার কল করলেও কোন সাড়া পাওয়া যায় নি।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে এখনো কোন মামলা হয়নি মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।