|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বরিশাল ||
এক যুবককে আটকের পর হাতে ইয়াবা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী যুবকের নাম মো. মারুফ শিকদার। সে শহরের কাউনিয়া বিসিক রোডের বেগের বাড়ির বাসিন্দা। দিনমজুর বাবা-মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে মারুফ ছোট।
এদিকে একটি সরকারি অফিসে এমন নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিচার দাবি করেছেন।
তবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো কিংবা নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার।
তবে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু বলেন, মাদক দিয়ে কাউকে ফাঁসানো এবং নির্যাতন করা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাজ নয়। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কোন টর্চার সেল নয়। যিনি নির্যাতন করেছেন দায় তার নিজের। এই দায় সংস্থা নেবে না। এ ঘটনা তদন্ত করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু।
পরিদর্শক মালেক তালুকদার অভিযোগ অস্বীকার করলেও সম্প্রতি বরিশালে ঐ যুবককে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফাঁস হয়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদারের অফিস কক্ষে হ্যান্ডকাফ পরিহিত এক যুবককের হাতে ৫ পিস ইয়াবা দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাদকের কথা স্বীকার না করায় তাকে মারধর করা হয়। এ সময় নির্যাতিত যুবক পানি পান করতে চাইলেও পানি না দিয়ে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করা হয়। লাঠি হাতে পরিদর্শক মালেক নির্যাতন করেন ওই যুবককে।
গত ২২শে সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে মারুফ শিকদার নামে ওই যুবককে আটক করা হয় নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড থেকে। তার কাছ থেকে ৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে অভিযোগ করে ওই রাতেই নগরীর কাউনিয়া থানায় একটি মামলা করেন পরিদর্শক আব্দুল মালেক।
ওই মামলায় ১৭ দিন হাজতবাসের পর কারাগার থেকে মুক্ত হলেও ফের হয়রানির আশঙ্কায় ওই কর্মকর্তার বিচার চাইতে ভয় পাচ্ছেন তিনি। তবে তার কাছে ইয়াবা পাওয়ার কথা অস্বীকার করে মারুফ তাকে নির্যাতনের অভিযোগ করেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান জানান, মারুফের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ কখনও শোনেননি তারা। মারুফকে অন্যায়ভাবে মাদক দিয়ে ফাঁসানো এবং নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তের কঠোর বিচার দাবি করেন তিনিসহ স্থানীয়রা। এদিকে নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড থেকে গত ২২শে সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষদর্শীদের উপস্থিতিতে ইয়াবাসহ মারুফ শিকদার নামে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার। তাকে কোন ধরনের নির্যাতন কিংবা ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।