বগুড়ায় ছাত্রলীগের ধাওয়ায় পুলিশ ফাঁড়িতে এমপি সিরাজ

ধাওয়া খেয়ে সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কাছের সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দল ও যুবদলের ৩ নেতাকর্মীকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বগুড়া ||

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে শেষপর্যন্ত পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নিলেন বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। রোববার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বাইরে তাকে ও তার দলীয় নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

ধাওয়া খেয়ে সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কাছের সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দল ও যুবদলের ৩ নেতাকর্মীকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ফিরে গেলে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যান। তবে ওই ঘটনায় কোন পক্ষই থানায় জিডি কিংবা অভিযোগ করেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকাল পৌনে ৯টার দিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শহীদ খোকন পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর অধিকাংশ নেতাকর্মী শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশের গেট দিয়ে হোটেল পট্টি হয়ে নওয়াববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যান। তবে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ জেলা বিএনপির সিনিয়র ৭/৮জন নেতা শহীদ মিনারের সামনের সার্কিট হাউস রোড হয়ে দলীয় কার্যালয়ের দিকে ফিরছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী গোলাম মোহাম্মদকে ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দিয়ে ধাওয়া করেন।

হামলার আশঙ্কায় তারা পুলিশের সহায়তায় দ্রুত নিকটবর্তী সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল বগুড়া জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সামসুল হক এবং যুবদল কর্মী মাসুদ ও সোহাগকে মারপিট করা হয়।

বিএনপি নেতৃবৃন্দ যখন পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে অবস্থান নেন তখন তার বাইরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আবারও সিরাজের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কয়েক মিনিট এভাবে স্লোগান দেওয়ার পর পুলিশের অনুরোধে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চলে যায়। এরপর পুলিশ সদর ফাঁড়িতে আশ্রয় নেওয়া বিএনপি নেতৃবৃন্দকে নিরাপদে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যেতে সহযোগিতা করে। ততক্ষণে তাদের সঙ্গে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী যোগ দেন এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পাল্টা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন।

বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ বিএনপি নেতারা শহীদ মিনার থেকে হেঁটে আসার সময় পেছন থেকে ধাওয়া করা হয়। তবে পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ওই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস বলেন, ‘বিএনপি নেতারা আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক স্লোগান দেওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা স্লোগান দিয়েছে মাত্র। এর বাইরে আর কিছুই করা হয়নি।

তবে বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ওই ঘটনাটিকে ‘ন্যাক্কারজনক’ জানিয়ে বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির মত পবিত্রতম দিনে ছাত্রলীগ নামধারী ছেলেদের এমন আচরণ সত্যিই দুঃখজনক।’ তাকে লক্ষ্য করে ‘রাজাকার’ স্লোগান দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের শব্দ অতীতে কখনও কেউ আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেনি। তারা কেন বলছে সেটা আমার বোধগম্য নয়।’

সংবাদ সারাদিন