|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
পুলিশের অভ্যন্তরীন তদন্ত কাজে সাংবাদিকদের তলব করায় উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবি। দুর্ণীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটির বাংলাদেশ অধ্যায়ের নেতৃ্ত্ব বলছে, সাংবাদিক তলবে পুলিশের পদক্ষেপ ‘স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি’।
অধস্তন সহকর্মীকে ‘দুর্নীতির’ কারণে বদলি করতে আইজিপিকে লেখা ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের চিঠি ফাঁসের তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে চিঠি দিয়েছে পুলিশ।
সাংবাদিকদের তলব করে পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সাংবাদিক তার সংবাদের উৎস প্রকাশ করবেন না, এটাই প্রতিষ্ঠিত নীতি। এখন যদি সাংবাদিককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয় যে, তাকে কে তথ্য সরবরাহ করেছেন, তাহলে ভবিষ্যতে দুর্নীতির ঘটনার ব্যাপারে কেউ আর মুখ খুলতে সাহস করবেন না। যা কার্যত স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্যই একটা প্রতিবন্ধক হিসেবে গণ্য হবে।”
তিনি বলেন, “এভাবে সংবাদকর্মীদের চাপের মধ্যে রাখার নীতি আত্মঘাতী, সার্বিকভাবে জনস্বার্থবিরোধী, এবং এর ফলে পুলিশের মতো একটি পেশাদার বাহিনী আদৌ তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধে আগ্রহী কী-না সেই প্রশ্ন উঠতে পারে।”
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান করেই জানা সম্ভব চিঠিটা কে ফাঁস করেছেন। অথচ এই পুরো প্রক্রিয়ায় যেভাবে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর দৃশ্যমান একটা চাপ তৈরি করা হচ্ছে, তাতে আমরা যারা দেশের সাধারণ নাগরিক তারা আতঙ্কিত বোধ করছি।”
পুলিশ বাহিনীতে দুর্নীতির ওই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যকর পদক্ষেপের দাবিও জানান ইফতেখারুজ্জামান।
উল্লেখ্য গত ৩০শে মে পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে একটি চিঠি পাঠান শফিকুল, যাতে ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (লজিস্টিকস) মো. ইমাম হোসেনকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ আখ্যায়িত করে তাকে জরুরি ভিত্তিতে বদলির সুপারিশ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, “ডিএমপির বিভিন্ন কেনাকাটায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তদুপরি তিনি ডিএমপির কেনাকাটায় স্বয়ং পুলিশ কমিশনারের নিকট ‘পার্সেন্টেজ’ গ্রহণের প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। ফলে উক্ত কর্মকর্তাকে ডিএমপিতে রাখা সমীচীন নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।”
তার ওই চিঠি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। পরে ওই চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকারও করেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল। তিনি ইমাম হোসেনকে বদলিও করেন।
এদিকে ওই চিঠি প্রকাশ হওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে কমিটি গঠন করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। ওই তদন্ত কমিটি সম্প্রতি চিঠি ফাঁসের ঘটনায় বক্তব্য জানতে বিভিন্ন সাংবাদিককে চিঠি পাঠায়।