পুরুষের সমান কাজেও কম মজুরি পাচ্ছেন জামালগঞ্জের নারী শ্রমিক

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, জামালগঞ্জ, (সুনামগঞ্জ) ||

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে ক্ষেতে ধানের চারা লাগানোয় পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে কাজ করছেন নারীরাও। নিম্ন আয়ের পরিবারের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজে যোগ দেয়। পুরুষ শ্রমিকের সংকট থাকায় নারী শ্রমিকদের চাহিদা বেশী। কাজে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে কিনা তা নজরদারিও করছেন মালিকরা।

নারী শ্রমিকরা বলছেন, শুধু ধান রোপনই নয়, ধান শুকানো থেকে মাড়াই। এমনকি সবজি আবাদ গরু ছাগল হাস মুরগি পালনসহ সব ধরনের কাজেই সমানতালে কাজ করছেন উপজেলার নারীরা। পুরুষের অনুপস্থিতে নারী প্রধান পরিবারের ব্যক্তি কৃষি কাজ করে সংসারে আয়ের যোগান দিচ্ছে।

শুধু উৎপাদনই নয় প্রক্রিয়াজাত করন, বাজারজাত করনের সঙ্গেও নারীরাও জড়িত। খাটুনি সমান হলেও নারী শ্রমিকদর মুজুরি কম নিয়ে অভ্যস্ত মালিকরা।

নারী শ্রমিক জমিলা খাতুন বলেন, পুরুষের চেয়ে আমরা বেশী কাজ করি। কাজে কোনো ফাঁকি দেইনা। সময় মত কাজে আসি সময় মত যাই। তবুও আমাদের মুজুরী কম মালিকরা বলে আমরা নারী আমরা পুরুষের মত কাজ পারি না।

বারবার প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যা ও করোনার কারণে বহু নারী পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন। নারীদের এই রোজগার পরিবারের অভাব অনটন মেটাতে সহায়ক হিসেবে অবদান রাখছে।

কিন্তু বাইরে নারীদের কাজের পরিবেশ নেই। তারা পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি। কোনো কোনো জায়গায় পুরুষের অর্ধেক মজুরী দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া ভূমি মালিকরা একটু দেরিতে গেলে গালমন্দও করেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নারীদের কৃষি ক্ষেতে কাজ করতে দেখা যায়। কিন্তু কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের অভিযোগের অন্ত নেই। সখিনা বেগম, পরিষ্কার বিবি , সালেহা বেগম, তারা জানান আমরা যথাযথ কাজের মূল্যায়ন পাইনা। সঠিক ভাবে কাজ করলেও পুরুষের তুলনায় কাজে মূল্য কম। আবার বাজারে কৃষিপন্য বিক্রি করতে গেলেও মূল্য কম পাই। সবক্ষেত্রে  নারীদের অবজ্ঞার চোখে দেখা হয় । অথচ আমরাই কঠোর পরিশ্রমের কাজ করি।

নারী সরদার জাহানারা বেগম জানান, উৎপাদন কাজে আমরা যথাযথ মূল্যায়ন পাইনা। ন্যায্য মজুরী মেলে না। সামাজিক কারণে আমরা আমাদের উৎপাদিত পন্য নিয়ে বাজারে যেতে পারিনা। গোটা বাজার ব্যবস্থা পুরুষের নিয়ন্ত্রনে। ফলে আমরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন জাতীয় কৃষি নিতিমালায়  নারী কৃষকদের সুস্পষ্ট সংঙ্গা সংযুক্ত করে কৃষক হিসাবে নারীদের কৃষি উপকরন সেবা প্রাপ্তিতে সুনিদ্রিষ্ট দিক নির্দেশনা থাকা দরকার। তাদের কাছে কৃষি সংক্রান্ত সব তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থায় গ্রামীন নারীর অংশ গ্রহনকে উৎসাহিত করে সরকারি ও বেসরকারি উদ্দোগ নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জাননো হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে ভুমি মালিকেরা জাতে নারী কৃষকদের যথাযথ মূল্যয়ন করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

সংবাদ সারাদিন