|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোণা ||
ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে নেত্রকোণার মদন উপজেলার হাওরে ১৭ জন মারা গেছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ৬জনই শিশু-কিশোর। নিহতরা হলেন ময়মনসিংহের কানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মারকাসুন্না হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাফুজুর রহমান (৪৫), তার ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র আসিফ মিয়া (১৫), মাহমুদ মিয়া (১২), ইসা মিয়া (৪৫), হেলাল উদ্দিনের ছেলে জাহিদ হাসান (২০), ওয়াজ উদ্দিনের মেয়ে লুবনা আক্তার (১০) ও জুলফা আক্তার (৭), রেজাউল করিম (১৬), সাইফুল ইসলাম (৩০), জুবায়ের (২২), হামিদুর ইসলাম (৩৫), আজাহারুল ইসলাম (৩৫), শফিকুর রহমান (৪০), তার ছেলে সামান (১০), শামিম হাসান (১০), মুজাহিদ (১৭) ও শহিদুল ইসলাম (৪০)।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মাদ্রাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৫) সাংবাদিকদের বলেন, তারা সবাই ময়মনসিংহের কানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তারা নৌকায় করে হাওরে বেড়াতে বের হয়েছিলেন।
তিনি নিজে নৌকার ছাদে ছিলেন জানিয়ে বলেন, নৌকাটি হঠাৎ বাতাসে উল্টে গেলে তিনি ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরাতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি ডুবে যেতে থাকলে গায়ের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলেন এবং পায়জামা খুলে ফেলেন। এরপর সাঁতরে কূলে ওঠেন।
নৌকাটিতে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী ওঠানো হয়েছিল বলেও তিনি জানান।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, বুধবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার গোবিন্দাশ্রী এলাকায় ৪৮ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা। ৩০ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ১৭ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করেন। মদনের উচিৎপুর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ওই নৌকা যাত্রীদের মধ্যে এখনও একজন নিখোঁজ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। দিন শেষে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ স্থগিত করেছে। তবে নেত্রকোণার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেছেন, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হলেও বাকিদের খুঁজতে বৃহস্পতিবার সকালে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
জেলা প্রশাসক মঈন-উল ইসলাম জানান, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে সাত হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হযেছে। তবে কমিটির সদস্যদের নাম তিনি তাক্ষণিকভাবে জানাননি।