|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রংপুর ||
রংপুরে বিস্তর জমিতে আমের চাষ আর ফলনও ভালো হলেও আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার চাষীরা। এইজেলায় বিশেষ করে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষই বেশী হয়ে থাকে। কিন্তু এবার দাম কম হওয়ায় প্রচুর আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমচাষীরা। পাকা আমের হাট বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতি থাকলেও, নেই ক্রেতা।
জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার একমাত্র হাড়িভাঙ্গা আমের হাট পদাগঞ্জে আমের বাজার শুরু হয়েছে চলতি মাসের ২০শে জুন থেকে। এই প্রতি দিনই বসে এ হাট ভোর ৬ থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলে এহাট । প্রতি বছর আম বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছেন চাষীদের ভাগ্যর কিন্তু এবারে করোনার মহামারির কারনে ঢাকাসহ দেশের অন্যে জেলার ক্রেতা না আসার বিপাকে পড়েছেন এই আম চাষীরা।
গত বছর হাড়িভাঙ্গা আমের প্রতি মন বিক্রি হতো ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবছর শুরু থেকেই আমের চাহিদা না থাকায় দামও কম। প্রতিমন বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ৮শ’ টাকা পর্যন্ত। দাম না পেয়ে অনেকেই পথে বসেছেন। অথচ অসাধারণ সুস্বাদু এই আম রংপুর ছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এ আমের কদর অনেক বেশি। কিন্তু করোনা মহামারির কারনে এ বছরে হাড়িভাঙ্গা আমের বিক্রি বলতে নেই।
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জসহ রংপুর জেলায় ১ হাজার ৮শত ৬৫ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা উন্নত জাতের আম চাষ করা হয়েছে। রংপুর অঞ্চলের মানুষের কাছে অতি জনপ্রিয় সুস্বাদু হাড়িভাঙ্গার আম কৃষকরা অধিক মুনাফার আসায় ঘ্যাড়ের ছাক দিয়ে আগাম বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন।
রংপুর অঞ্চলের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ একমাত্র হাড়িভাঙ্গা আমের স্থান যেখানে প্রতি বছর আমের মেলা বসে পদাগঞ্জবাসী হাড়িভাঙ্গা আমচাষে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে। ফলে প্রতি বছর বাড়তে থাকে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগানের সংখ্যা। তাই তাদের পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
প্রতি বছর চাষীদের অনেকে আম বিক্রি করে কন্যা বিদায় দিতো, পরিশোধ করতো দায়দেনা। কিন্তু এবারে আর সেটি হচ্ছে না। পদাগঞ্জ এলাকার আম চাষী ফুলবাবু, গোলাম মোস্তফা, রুস্তম আলী, বকুল মিয়ার মতো আমচাষী জানান, এবারে আমের দাম না থাকায় লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান গুনতে হবে তাদের। ক্ষতি সামাল দিতে সরকারি সহায়তা চাইছেন তারা।
এদিকে পদাগঞ্জ হাটের ইজারাদার আইয়ুব আলী জানান, আম বিক্রেতা অনেক। ক্রেতা না থাকায় আমের দাম একেবারে কম। এব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচলিক ওবায়দুর রহমান মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এবছর রংপুর জেলায় ১ হাজার ৮ শত ৬৫ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ হয়েছে। চাষীদের অভিযোগ শুনেছি করোনার কারনে একটু দাম কমেছে কারন ঢাকাসহ সারদেশের ব্যবসায়ীরা করোনার কারনে আসতে পারছেনা। এর বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে ।