|| বার্তা সারাবেলা ||
দেশের তিনটি স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে আটজনের। এরমধ্যে পাবনার সাঁথিয়ায় সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি বসতঘরে ঢুকে পড়লে মারা গেছে বাবা ও মেয়ে। বরিশালে কভার্ডভ্যানের ধাক্কায় মারা গেছে দুটি ট্রাকের চালক সহ তিনজন। আর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হয়েছে তিন পথচারী।
পাবনায় নিহত বাবা মেয়ে
সিমেন্ট বোঝাইেএকটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের বসতঘরে ঢুকে পড়লে মারা যান এক বাবা ও তার মেয়ে।সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে উপজেলার ভিটাপাড়া এলাকায়। নিহতরা হলেন- উপজেলার ৩৭ বছর বয়সী দিনমজুর শাহ বাবু ও তার ১২ বছর বয়সী মেয়ে বৃষ্টি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘শাহ বাবু স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন।এ সময় নগরবাড়ি থেকে সিরাজগেঞ্জর বাঘাবাড়িমুখী সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক তাদের টিনের ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এতেই বাবু ও তার মেয়ে বৃষ্টি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ সময় বাবুর স্ত্রী লাকী খাতুন ও তিন বছরের ছেলে সাগর অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায়।
আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস গিয়ে দুজনের লাশ উদ্ধার করে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা হলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে।
বরিশালে নিহত তিনজন
গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার বরাতে আমাদের বরিশাল সংবাদদাতা জানান, শনিবার ভোরে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইল্লা এলাকার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বরিশালগামী একটি মিনি ট্রাক বিকল হয়ে যায়। বিকল ট্রাকটি টেনে নেওয়ার জন্য বরিশালগামী আরেকটি ট্রাক সেখানে যায়। বিকল ট্রাকটি রশি দিয়ে বাঁধার সময় একটি কভার্ডভ্যান দ্রুতগতিতে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ট্রাকের চালক এবং এক সহকারী নিহত হন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, ট্রাকচালক বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আক্তার হোসেন (৩০), পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার সোহান (২২) এবং ট্রাক চালকের সহকারী বরিশাল নগরীর উত্তর জাগুয়া গ্রামের রাসেল (২২)।
খবর পেয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি মনিরুল বলেন, তিনটি বাহন আটক করা হলেও কভার্ডভ্যানের চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। এছাড়া এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোনারগাঁয়ে প্রাণ গেছে তিন পথচারীর
শুক্রবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসের ধাক্কায় তিন পথচারী নিহত হন। দুই বাসের মধ্যে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতার এক পর্যায়ে একটি বাসের ধাক্কায় তারা প্রাণ হারান। নিহতরা হলেন- কাঁচপুর রায়েরচেক এলাকার ফজল করিমের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (২০), রংপুরের কোতয়ালী থানার শ্যামপুর গ্রামের প্রয়াত মুকুলের ছেলে ওহিদুল (৩২) ও চাঁদপুরের উত্তর মতলব থানার উদমদি গ্রামের প্রয়াত নকুল সরকারের ছেলে সজীব সরকার (২৮)। ওহিদুল ও সজীব সরকার কাঁচপুর এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামগামী লেনে শুক্রবার সকালে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় বোরাক পরিবহন ও হোমনা সুপার সার্ভিসের দুটি বাস। এক পর্যায়ে বোরাক পরিবহনের বাসটি কাঁচপুর ওভারব্রিজের ঢালুতে থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছিল। এ সময় হঠাৎ হোমনা সুপার সার্ভিসের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বোরাক পরিবহনের বাসের পেছন দিকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তা পারাপারের জন্য বোরাক পরিবহনের বাসটির পেছনে থাকা তিন পথচারী গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এলাকাবাসী বাস দুটিকে আটক করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, বাস দুটি আটক করা হয়েছে। চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।