তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে বাঁশের মাঁচা বসিয়ে চাঁদাবাজি

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের নিয়ে আসা-যাওয়ার এসব বাহন থেকে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। অভিযোগ দায়েরের সাতদিন পেরিয়ে গেলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ ||

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের শুকনো রাস্তায় বাঁশের মাচা বসিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও মিলছে না কোন প্রতিকার। বিশেষ করে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত যাদুকাটা, শিমুলবাগান, বারেকটিলা, টেকেরঘাট ও টাংগুয়ার হাওরে আসা-যাওয়ার যানবাহনগুলো থেকে নেয়া হচ্ছে চাঁদা।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের নিয়ে আসা-যাওয়ার এসব বাহন থেকে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। অভিযোগ দায়েরের সাতদিন পেরিয়ে গেলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

অভিযোগকারীরা বলেছেন, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের পোছনারঘাট ব্রিজ থেকে পাতারগাঁও গ্রাম পর্যন্ত আনুমানিক ৫ থেকে ৬শ মিটার মাটির কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এই সড়কটি সঠিকভাবে নির্মাণ না করার কারণে প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। যে কারনে বর্ষার সময়ে চার থেকে পাঁচমাস নৌকাতে পারাপার করতে হয় ভাঙ্গা এই সড়কটুকু।

কার্তিক থেকে বৈশাখ পর্যন্ত প্রায় সাতমাস শুকনো মৌসুমে পর্যটক ও স্থানীয়রা স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করতে পারে এই সড়কে। তারপরও স্থানীয় প্রভাবশালীরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেয়াঘাটের নামে শুকনো রাস্তার মাঝে বাঁশ ও দড়ি দিয়ে শতশত যানবাহন ও পথচারীদের আটকে চাঁদাবাজি করে থাকে।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

এ ব্যাপারে তাহিরপুর ও বাদাঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা সৌরভ সরকার, প্রলয় রায়, আলী আমজদ, নেয়ামুল, গৌতম মৈত্র, ইসলাম উদ্দিন, খেলু মিয়া, নুর হোসেন, চাঁন মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন- পোছনারঘাটে ব্রিজের গোড়ায় মাটি দিয়ে ভরাট না করে সেখানে বাঁশের তৈরি ৫ হাত মাঁচা বসিয়ে প্রায় ৫ মাস ধরে সবার সামনেই চাঁদাবাজি করছে। চাঁদার টাকা না দিলে পর্যটক ও স্থানীয়দের মারধরসহ লাঞ্ছিত করে প্রভাবশালীদের লোকেরা। কোন কোন সময়ে গাড়িও আটকে রাখা হয়। ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা রাইসুল ইসলাম, আল আমিন, আশরাফ আলম ও রাহুল সরকার বলেন, ২টি প্রাইভেটকার নিয়ে মাটির রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করতে গিয়ে ২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে।

চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রসঙ্গে কথিত চাঁদাবাজরা জানায়, মাটির এই শুকনো রাস্তাটি ইউএনও’র কাছ থেকে লিজ নিয়েছে তারা।

বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন,“আমি যখন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাতারগাঁওয়ের রাস্তাটি লিজ দিতাম, তখন মেয়াদ দেওয়া হতো বর্ষার ৬ মাস। পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে টোলট্যাক্স বন্ধ করে শুকনো রাস্তা খুলে দেওয়া হতো। এবার অবশ্য উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে রাস্তটি লিজ দেওয়া হয়েছে। তাই এব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। ইউএনও সাহেবই বলতে পারবেন।” উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, “আমি তাহিরপুরে যোগ দেয়ার আগেই রাস্তাটি লিজ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে রাস্তায় পানি নাই কিন্তু ব্রিজের গোড়ায় বাঁশ দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। এব্যাপারে ইজারাদারদের সাথে কথা বলবো।

সংবাদ সারাদিন