ডাটাবেজে মৃত দেখিয়ে বন্ধ বয়স্ক ভাতা

তিনি ২০১০ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা পেয়ে এলেও ২০২০ সালের জুনে সর্বশেষ ভাতা তোলার পর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। ১ বছর ভাতা বন্ধ থাকায় ভীষণ কষ্টে আছেন প্রস্টেট গ্লান্ডের রোগী কাচু শেখ।

|| সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম থেকে ||

‘কেমন করি মনু, কেমন করি বত্তিনু, মুই কিছুই জানং না বাহে। দেহতো বাবা, মুই মানুষটে গরমের জ্বালায় মাঠোত যায়া বাতাস খাবার নাগছোং, মুই বলে মরিচোং বাহে? কয় কী বাহে? ভাতা কোনা পাছনু তাহো বন্ধ করি দিছে। দেশোত কি বিচের নাই বাবা?’ দম নিয়ে নিয়ে কথাগুলো বললেন জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা বন্ধ হওয়া কাচু শেখ (৭৭)। ক্ষোভ, আক্ষেপ ও হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে তার চোখেমুখে। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের শামসপাড়ায়। বাবা মৃত আসমত শেখ।

কাচু শেখ জানান, তার ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরা পৃথকভাবে থাকলেও তিনি বড় ছেলের দুই প্রতিবন্ধী সন্তান ও বৃদ্ধ স্ত্রীসহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা পেয়ে এলেও ২০২০ সালের জুনে সর্বশেষ ভাতা তোলার পর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। ১ বছর ভাতা বন্ধ থাকায় ভীষণ কষ্টে আছেন প্রস্টেট গ্লান্ডের রোগী কাচু শেখ। তার অভিযোগ, নির্বাচন অফিস থেকে তাকে মৃত দেখানোতে সমাজসেবা অফিস ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে।

সমাজসেবা অফিসার লুৎফর রহমান জানান, ভাতাভোগীদের নাম অনলাইনে হালনাগাদ করতে গিয়ে দেখা যায়, কাচু শেখকে ভোটার ডাটাবেজে মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে তার ভাতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার ইকবাল হোসেন বলেন, তথ্য সংগ্রহকারী ও মেম্বারদের ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। পরে আবেদন সাপেক্ষে কমিশনে অনুরোধ করে এ ভুল সংশোধন করা হয়েছে। কাচু শেখের দাবি, তার বন্ধ থাকা বয়স্কভাতা আবার চালু করা হোক। পরিশোধ করা হোক গত ১ বছরের বকেয়া ভাতা।

সংবাদ সারাদিন