||সারাবেলা প্রতিনিধি, হাওরাঞ্চল (সুনামগঞ্জ) ||
“শেখের বেটি হাসিনার উছিলায় আমি পোলাপাইন লইয়া ঘুমাইতে পারতাছি। আমি সারাজীবন ভাঙ্গা ঘরে ঘুমাইছি। বন্যা আর ঢেউয়েই আমার জীবন কাটছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে থাকার লাগি একটা ইটের ঘর দিছে। এই ঘরে পুলাপাইন লইয়া থাকতে পারি। এখন আর আমার ঘুমাইবার ডর নাই। শীতে আর কষ্ট করতে হয় না। চার বছর হয় আমার স্বামী মারা গেছে। তিনটা এতিম ছেলেমেয়ে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি কাম কইরা খাই। কেউ আমারে কাম ছাড়া কোন সাহায্য দেয় নাই। আমি শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন তাইনেরে অনেক বছর বাঁচাইয়া রাখেন।”
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে এ কথাগুলো বলেছেন জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাঁনপুর আবুরহাঁটি গ্রামের স্বামীহারা মালেমছা বিবি।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ তহবিল থেকে ৬৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে টিআর-কাবিখা প্রকল্পের আওতায় দুর্যোগ সহনীয় ৩৮টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। ৬টি ইউনিয়নের ৩৮টি হতদরিদ্র্য পরিবারের মাঝে এ ঘরগুলো দেয়া হয়েছে। প্রতিটি গৃহ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। পাকা টিনসেডের ঘরে রয়েছে দুই থাকার রুম, রান্নাঘর ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট।
জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মানবিক উদ্যোগের ফলে উপজেলায় ৩৮টি হতদরিদ্র্য পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলার সমুদয় হতদরিদ্র্য পরিবারগুলোকে গৃহ নির্মাণের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।
জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের সোনাবান বেগম, ভীমখালী ইউনিয়নের হাসনাবাজ গ্রামের গোলাপ মিয়া, রাজাবাজ গ্রামের গৃহকর্মী জাহানারা বেগম, বেহেলী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের অলেখা বেগমসহ আরও অনেকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আমরা আনন্দিত। এই ঘর পাইয়া পরিবার-পরিজন লইয়া আমরা সুখে শান্তিতে বসবাস করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর লাগি দোয়া করি তিনি যেন মরার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. এরশাদ হোসেন বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপজেলার ৩৮টি হতদরিদ্র্য পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্মাণ শেষে সবগুলো ঘর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ একটি মহৎ উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে উপজেলায় ৩৮টি হতদরিদ্র্য পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মুজিববর্ষে উপজেলায় ‘ক’ তালিকা থেকে বাছাই করে আরও ৫০টি পরিবারকে জায়গাসহ ঘর দেওয়া হবে।